আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

ফোনের মাধ্যমে অনেকবার তালাক দিলে

( ফতোয়া ও মাস‘আলা-মাসায়েল : পোস্ট কোড: 18243 )

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: হুজুর প্রথমে আমার সালাম নিবেন। আমি একটা সহিহ ফতোয়া চাই!!
আমি প্রায় ৩ বছর আগে আমার স্ত্রী একজন এর সাথে ফোন এ কথা বলতো। পরে আমি বিষয়টি জানতে পারি । তারপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে অস্বীকার করে। পরে আমি ফোনে তালাক দিয়ে দেই। রাগের মাথায় অনেকবার বলেছি। পরে আমি বাড়িতে যাই এবং গ্রামের লোকজন জানাজানি হয়ে যায়। পরে আমাদের উভয় পরিবারের লোকজন তালাকের কাগজে আমাদের স্বাক্ষর নেয় এবং আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বিঃদ্রঃ বলে রাখি যে আমাদের তখন ২ বছরের একটি মেয়ে ছিল। পরে আমি অনেক হুজুরের কাছে যাই। অনেক এ বলেছেন আমার স্ত্রীকে আবার অন্য কোথাও বিয়ে দিতে হবে । আবার অনেক এ বলেছেন তিন মাস ১০ দিন পর আবার বিয়ে করা যাবে। আমি তাই করি। উক্ত দিন পর আবার নতুন মোহরানা ধার্য করে বিয়ে করি।এই ভাবে আমদের প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, কোরআন হাদিস মোতাবেক আমাদের সংসার কি সঠিক? আমি আমার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসি যদি সঠিক না হয় কি করলে আমার স্ত্রী হালাল হবে ? মূল্যবান মতামত জানাবেন ধন্যবাদ ।
নিবেদক
মুহা.আশিকুল ইসলাম
জয়পুরহাট
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি সঠিক হয়ে থাকে এবং আপনি আপনার স্ত্রীকে ফোনের মাধ্যমে তিনবার তালাক দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্ত্রীর উপর তিন তালাক কার্যকর হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে এবং আপনারা একে অপরের জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে গেছেন। পুনরায় এভাবে বিবাহ করার মাধ্যমেও আপনাদের ঘর-সংসার বৈধ হচ্ছে না। এতে আপনাদের মারাত্মক গুনাহ হচ্ছে। এজন্যে আপনাদেরকে খাঁটি দিলে তাওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে। এক্ষেত্রে কেউ কেউ যে বলেছেন, তিন মাস দশ দিন পর বিবাহ করলে বিবাহ বৈধ হবে তাদের এ কথাটি সঠিক নয়। এখন যদি আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে ঘর সংসার করতে চান তাহলে আপনার স্ত্রী তালাকের ইদ্দত অর্থাৎ ঋতুমতি হলে তিনটি ঋতু আর গর্ভবতী হলে সন্তান হওয়ার পর স্বেচ্ছায় অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এরপর দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর যদি কোন কারণে তালাক দেয় বা মারা যায় তাহলে তার ইদ্দত শেষ হওয়ার পর আপনারা পরস্পর রাজি থাকলে নতুনভাবে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে মোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।
উল্লেখ্য, শরীয়তের দৃষ্টিতে সাধারণ অবস্থায় তালাক খুবই অপছন্দনীয় ও গর্হিত কাজ। তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতি প্রয়োজন ছাড়া তা প্রয়োগ করা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়। যদি কখনো তালাক দিতেই হয় তাহলে পরামর্শ অনুযায়ী এক তালাকের বেশি দেওয়া উচিত নয়। তাও শান্ত পরিবেশে রাগের পরিবেশে নয়।

الاحالة الشرعية على المطلوب-
قوله تعالى في سورة “البقرة”(اية ٢٣٠) فإن طلقها فلا تحل له من بعد حتى تنكح زوجا غيره
أخرج الإمام البخاري في “صحيحه”(٢/٧٩١) عن عائشة أن رجلا طلق امرأته ثلاثا فتزوجت فطلق فسئل النبي صلى الله عليه وسلم أتحل للأول قال لا حتى تذوق عسيلتها كما ذاك الأول
أخرج الإمام البخاري في “صحيحه”(٢/٧٩٢) قال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فإن النبي صلى الله عليه وسلم أمرني بهذا فإن طلقها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيره
وفي “بدائع الصنائع”(٤/٤٧٩) وأما الطلقات الثلاث فحكمها الأصلي هو زوال الملك وزوال المحلية أيضا حتى لا يجوز له نكاحها قبل التزوج بزوج أخر
وفي “الهندية”(١/٥٣٥) وإن كان الطلاق ثلاثا في الحرة أو ثنتين في الأمة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا ويدخل بها أو يموت عنها….انتهى، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

Fatwa ID: 18243
Scroll to Top