বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়:স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম।আমার স্বামীর সাথে দীর্ঘদিন আগে থেকেই তালাকের বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু রমানের শুরুতেই আমার স্বামীর সাথে কথোপকথন হয়।৮/৯রোজার দিকে আমার স্বামী এক পর্যায়ে বলে আমি তোমাকে তালাক দিবো না, তোমার পরিবারের মাধ্যমে দিবা, নাকী তুমি নিজে দিবা, কিভাবে দিবা দিয়ে দাও। এবং এই রমজান মাসের ভিতরেই শেষ করবা,এবং কাগজ পাঠালে সাইন করে দিবো। তারপর ১৩/১৪রোজার দিনে তার সাথে আমার হাতাহাতি শুরু হয়। হাতাহাতির এক পর্যায়ে আমিও বলে ফেললাম, আমি আমার নিজেকে এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, গ্রহণ করিয়া বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাইলাম। অতএব উক্ত কথার দ্বারা তালাক হয়ে গেছে কি না ? আমাকে দলিল সহকারে জানাবেন।
নিবেদক
মোসা:সুরমা আক্তার
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি সত্য হয় আর আপনার স্বামীর তালাকের অনুমতি সংক্রান্ত বক্তব্য দ্বারা যদি তিন তালাকের নিয়ত না থাকে, তাহলে আপনার স্বামীর বক্তব্যের কারণে আপনার উপর এক তালাকে রজয়ী কার্যকর হয়েছে।সে ক্ষেত্রে এখন যদি আপনারা পুনরায় ঘর সংসার করতে চান,তাহলে আপনার ইদ্দতের মধ্যে অর্থাৎ আপনি ঋতুমতী হলে তিনটি ঋতু আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব করার পূর্বেই স্বামী কর্তৃক আপনাকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করতে হবে। অথবা আপনার সাথে স্বামী-স্ত্রী সূলভ আচরণ করলেই আপনি পূর্বের স্ত্রী হিসাবে বহাল হয়ে যাবেন।আর ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে তালাকটি বায়েনে রূপান্তরিত হয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।আর যদি পূর্বের স্বামীর সাথেই বৈধভাবে সংসার করতে চান,তাহলে নতুনভাবে মোহর ধার্য করে দু’জন উপযুক্ত সাক্ষীর সামনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।তবে আপনাকে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেক বা ইদ্দত শেষে ফিরিয়ে নেক উভয় অবস্থায় স্বামী পরবর্তীতে কেবল মাত্র দুই তালাকের অধিকারী থাকবে।তাই পরে কখনো আপনাকে দুই তালাক দিয়ে দিলেই আপনি তার জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যাবেন। সে ক্ষেত্রে এভাবে পুনরায় বিবাহ করলেও ঘর সংসার করা বৈধ হবে না।
আর যদি আপনার স্বামীর ঐ বক্তব্যের মধ্যে তিন তালাক গ্রহণের অনুমতি দেওয়ার নিয়ত থাকে,তাহলে আপনার উপর তিন তালাক কার্যকর হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে এবং আপনারা একে অপরের জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে গেছেন।তবে আপনি তালাকের ইদ্দত শেষ করার পর স্বেচ্ছায় অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।যদি অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর কোন কারণে আপনাকে তালাক দেয় বা মারা যায়,তাহলে তার ইদ্দত শেষ করার পর উভয়ে রাযী থাকলে আপনারা নতুনভাবে দু’জন উপযুক্ত সাক্ষীর সামনে মোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।
الاحالة الشرعية على المطلوب-
في”فتح القدير” (٤/٨٦) ومن قال لإمرأته طلقي نفسك ولا نية له أو نوى واحدة فقالت طلقت نفسي فهو واحدة رجعية وإن طلقت نفسها ثلاثا وقد اراد الزوج ذلك وقعن عليها وهذا لأن قوله طلقي معناه افعلي فعل التطليق وهو اسم جنس فيقع على الأدنى مع احتمال الكل كسائر اسماء الأجناس فلهذا تعمل فيه نية الثلاث وينصرف إلى واحدة عند عدمها وتكون الواحدة رجعية لأن المفوض إليها صريح الطلاق
وفي”تبيين الحقائق” (٣/٩٦) قال رحمه الله: ولو قال لها:طلقي نفسك ولم ينوي أو نوى واحدة فطلقت وقعت رجعية وإن طلقت ثلاثا ونواه وقعن
وفي”الدر المختار” (٤/٥٦٣) قال لها طلقي نفسك ولم ينو أو نوى واحدة أو ثنتين في الحرة فطلقت وقعت رجعية وإن طلقت ثلاثا ونواه وقعن
وفي “قاسميہ”(١٦/١٨٢) سوال: زید نے اپنی بیوی سے کہا تجھ کو اختیار ہے تو اپنے اوپر طلاق واقع کر لے کھا یہاں کرے چاہیے گھر جا کر کر لے تو بیوی نے اگلے دین کہا میں اپنے اپ کو تین طلاق دے رہی ہوں تو اس صورت میں کتنی طلاق واقع ہوگی ؟ جواب: صورت مذکورہ میں شوہر نے اگر تین طلاق کی نیت کی ہے تو اس کی بیوی کو تین طلاق واقع ہو جائیں گی لیکن اگر شوہر نے صرف ایک کی نیت کی تھی یا نیت نہیں کی تھی بہر دو صورت بیوی کو صرف ایک طلاق رجعی واقع ہوگی.انتهى، والله أعلم بالصواب