আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

তালাকের মাসয়ালা প্রসঙ্গে।

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়:তালাকের মাসয়ালা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম, মাননীয় মুফতী সাহেব হুজুর। আমার কয়েকটি বিষয়ের সমাধান চাই। ১.স্ত্রী একটা জায়গায় যেতে চাই সেটা ফোন করে স্বামীকে বলে, স্বামী যেতে নিষেধ করে কিন্তু সে যেতে চাই। তাই স্বামী বলেছে”যদি যাও তাহলে আমার ঘরে আর আসবে না,ছাইড়া দিবো”। (একথা বলার সময় তালাকের নিয়ত ছিল না) কিছুক্ষণ পর স্বামী ফোন করে স্ত্রীকে নিজেই যেতে বলে। এর মাধ্যমে কি সমস্যা হবে ? যদি তালাকের নিয়ত থাকতো তাতেও কি সমস্যা হতো ? নিষেধ করে নিজেই যেতে দিলে। ২.স্ত্রী এমন এমন আমার অপছন্দের কাজ করে যা আমাকে খুবই কষ্ট দেয়। তখন তর্ক হলে এইসব কথা বলে ফেলি”তোমার মত বউ আমার লাগবে না, তুমি তোমার মত থাকো, তুমি স্বাধীন, যা ইচ্ছা কর, তোমার কিছু দিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই” এগুলো বলার সময় তালাকের নিয়ত থাকে না। বলতে চাই না, কিন্তু অবস্থা এমন থাকে যে,বের হয়ে যায়। এতে কি কোন সমস্যা হবে ? ৩.তালাকের বিষয় থেকে কিভাবে বেঁচে থাকতে পারিএকটু পরামর্শ দিবেন।
নিবেদক
মুহা.সাকিব
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নের প্রথম অংশে স্বামীর বক্তব্য”যদি যাও তাহলে আমার ঘরে আসবে না” কথাটি কেনায়া তথা তালাকের ইঙ্গিতসূচক। তালাকের নিয়তে কথাটি বলে থাকলে তালাক কার্যকর হয় অন্যথায় তালাক কার্যকর হয় না। প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী স্বামীর তালাকের নিয়ত ছিল না। তাই কোন তালাক কার্যকর হয়নি।
আর “ছাইড়া দিব” কথাটি ভবিষ্যৎকাল হওয়ার কারণে কোন অবস্থায় তালাক কার্যকর হবে না। কারণ, ভবিষ্যৎ কালসূচক শব্দ দ্বারা তালাক হয় না।
প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশে আপনার কথা “তোমার মত বউ আমার লাগবে না, তুমি তোমার মতো থাকো, তুমি স্বাধীন, যা ইচ্ছা কর, তোমার কিছু দিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই” এসবগুলো কেনায়া শব্দ। আপনি যদি উক্ত কথাগুলো বলার সময় সত্যিই তালাকের নিয়ত না করে থাকেন তাহলে আপনার স্ত্রীর ওপর কোন তালাক কার্যকর হয়নি।
উল্লেখ্য, শরীয়তের দৃষ্টিতে সাধারণ অবস্থায় তালাক খুবই অপছন্দ ও গর্হিত কাজ। তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতি প্রয়োজন ছাড়া তা প্রয়োগ করা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়। তাই তালাকের ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হবে যেন কোন অবস্থায় তালাকের কথা মুখ থেকে বের না হয় । বিশেষ করে রাগের সময় কথা না বলে চুপ থাকার চেষ্টা করা, স্থান পরিবর্তন করা, দাঁড়ানো থেকে বসে যাওয়া এবং বেশী বেশী দরুদ শরীফ পড়ার উপর আমল করা যেতে পারে।

الإحالة الشرعية على المطلوب-
أخرج المصنف لإبن ابي شيبة(٩.٦٦٠) عن الحسن في الرجل قال لإمراته اخرجى .. استترى.. اذهبى لا حاجة لى فيك فهى تطليقة ان نوى الطلاق.(١٨٢٩٤)
وفي”تنوير الأبصار”(٤.٥١٦) (ف) الكنايات (لا تطلق بها) قضاء (إلا بنية أو دلالةالحال)
وفي”الشامي”(٤.٥١٦) قوله (قضاء) قيد به. لأنه يقع ديانة بدون نية
وفي”الهندية”(١.٤٤٢) الفصل الخامس: في الكنايات لا يقع بها الطلاق الا بنية أو بدلالة حال
وفي”بدائع الصنائع (٤.٢٨١)كل لفظ يستعمل في الطلاق ويستعمل في غيره نحو قوله أنت بائن.. قومى.. اخرجى. اغربى. انطلقى.انطلقى. وإذا احتملت هذه الالفاظ الطلاق غير الطلاق فقد استتر المراد منها عند السامع فافتقرت الى النية لتعيين المراد
وفي”النوازل”( ١٧.٦٨٨ )الجواب: لفظ چلے جا۔ یہاں سے نکل جا ۔۔ ان تمام الفاظ میں سے کسی سے بھی اگر شوہر کی نیت طلاق کی تھی تو طلاق بائن واقع ہوگی بغیر دو بارہ نکاح کی ہوئی بیوی حلال نہیں ہو سکتی اور اگر طلاق کی نیت نہیں تھی تو طلاق واقع نہیں ہوئی..انتهى، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

 

 

 

Scroll to Top