আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

তালাকের ওয়াসওয়াসা প্রসঙ্গে

শেয়ার করুন !!

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল জামিআ‘তুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: তালাকের ওয়াসওয়াসা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আমি একজন ওয়াসওয়াসার রোগী, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তালাকের ওয়াসওয়াসা আমার মধ্যে দেখা দেয়। কিছুদিন পর ওয়াসওয়াসা থেকে সন্দেহে পরিণত হয়। আমার স্ত্রীর সব কাজেই আমার সন্দেহ হয়, কারণ সে আমাকে মিথ্যা কথা বলেছিল। আমার স্ত্রীর একটা খারাপ অভ্যাস ছিল ছেলেদের দিকে তাকানো, কিন্তু ও সেটা আমাকে মিথ্যা বলতো, সেখান থেকেই সন্দেহের শুরু। একটা কথা না বললেই নয়, আমি আমার বাবাকেও সন্দেহ করি, আমি আমার বাবাকেও জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু আমার বাবা বলেছে আমার স্ত্রীর সাথে কোন খারাপ কিছু নেই। আমার স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসা করেছি সেও বলেছে খারাপ কিছু নেই, কিন্তু আমার বাবার ব্যবহার এখনো আমার মনে সন্দেহ জায়গায়। আমি আমার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসি, স্ত্রীও আমাকে ভালোবাসে। আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট, কিন্তু এই সন্দেহের কারণে বারবার আমার মুখ দিয়ে কেনায়া শব্দ মনে মনে আসে, কথা বললেই মনে মনে তালাকের চিন্তা হ্যাঁ বোধক হয়। মাথা নাড়িয়ে অনেক সময় তালাকের ব্যাপারে হ্যাঁ বোধক হয়। উদাহরণ, যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, বউ কেমন আছে, তখন মাথার ইশারায় না বোধক হয়, এতে কি তালাক হয়। আর আমি চাই মুখে তালাক  বললেও যেন তালাক না হয়। আমি অনেক সময় মনে মনে বলি, যদি আমার স্ত্রীর কোন কাজে আমার সন্দেহ হয়, আমি মনে মনে বলি আমি তো ভালোবাসি ও যা খুশি করুক আমি কিছু বলবো না, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আমার তালাক শব্দটা মাথায় ঘোরে, কারণ আমি আমার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসি।
নিবেদক
মুহা: আমিনুল ইসলাম
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ অনুযায়ী আপনার স্ত্রীর উপর কোন তালাকই কার্যকর হয়নি। কেননা তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তালাকের শব্দ মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক। শুধু মনে মনে তালাকের শব্দ আসা, বা মাথায় ইশারা করার দ্বারা তালাক কার্যকর হয় না।হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের মনে মনে কথা বলা ক্ষমা করে দিয়েছেন যতক্ষণ না সে তা কাজে বাস্তবায়ন করে, কিংবা কথার মাধ্যমে প্রকাশ করে (বুখারী শরীফ হাদিস নং ২৫২৮)
জেনে রাখা উচিত যে, ওয়াসওয়াসা হলো শয়তানের পক্ষ থেকে কুমন্ত্রণা। এর দ্বারা শয়তানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঈমানদারকে সর্বক্ষণ চিন্তা পেরেশানিতে আবদ্ধ রাখা। এর প্রতিকার হচ্ছে সেদিকে একেবারেই ভ্রুক্ষেপ না করা, বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা, তাওবা ইস্তেগফার করা, গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা, এবং নিম্নে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়া।
١) اعوذ بالله من الشيطان الرجيم
٢) رب اعوذ بك من همزات الشياطين واعوذ بك رب ان يحضرون ( سوره المؤمن ٩٨ -٩٧
٣) امنت بالله ورسوله

الاحالة الشرعية على المطلوب
قال الله تعالى في القران الكريم: وإما ينزغنك من الشيطان نزغ فاستعذ بالله انه سميع عليم۝ (سوره الاعراف)
أخرج الإمام البخاري في “صحيحه” (برقم ٢٥٢٨ ) عن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال النبي صلى الله عليه وسلم إن الله تجاوز عن امتي ما وسوست به صدورها ما لم تعمل او تتكلم
أخرج الإمام مسلم في “صحيحه” (برقم ١٣٤) عن أبي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يزال الناس يتساءلون حتى يقال هذا خلق الله الخلق فمن خلق الله فمن وجد من ذلك شيئا فليقل امنت بالله
وفي “حاشيه الطحطاوي على مراقي الفلاح”(٢١٩) لو جرى الطلاق على قلبه وحرك لسانه من غير تلفظ يسمع لا يقع
وفي “رد المحتار” (٦ /٤٦ ) وقال الليث الوسوسه حديث النفس وإنما قال موسوس لأنه يحدث بما في ضميره وعن الليث لا يجوز طلاق الموسوس
وفي “البخاري” ٢( / ٧٩٣) وقال عقبة بن عامر لا يجوز طلاق الموسوس
وفي “بدائع صنائع”( ٤/٣٣٢) عدم الشك من الزوج في الطلاق وهو شرط الحكم بوقوع الطلاق حتى لو شك فيه لا يحكم بقوعه.- إنتهى ، والله أعلم با لصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।


শেয়ার করুন !!
Scroll to Top