বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: কেনায়া তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আমি আর আমার হাসবেন্ড ফোনে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছিলাম। কথার এক পর্যায়ে আমি তাকে বলি আপনাকে আমার ভালো লাগে না। (কথাটি অভিমান থেকে বলেছি, মাঝে মাঝে তার কিছু কথায় মন খারাপ হয়, তাই বলেছি)। তখন সে বলে,
১। ভালো না লাগলে চলে যাও, যাকে ভালো লাগে তার কাছে চলে যাও।
২। অথবা বলেছে, চলে যাও, যাকে ভালো লাগে তার কাছে চলে যাও। (একবারই বলেছে)
(আমার ধারণা উনি হয়তো ভেবেছে আমার উনাকেই পছন্দ না তাই এমন বলছি। বিষয়টা এমন না। কিছু কথায় মনে খারাপ হয় তাই বলেছি) আমি পরে হয়তো দুই একটা অন্য বিষয়ে কথা বলে (কি বলেছি মনে নেই, তবে সম্ভবত এ বিষয়ে আর কিছুই না বলে) রাগ করে ফোন কেটে দেই। তখন সে তৎক্ষণাত বা কিছু পরে (খুব অল্প সময়) আবার ফোন দিয়ে বলে আমি তো মজা করে বলেছি এবং বলে এ ধরণের কথা আর কখনও বলবে না। পরে দুই সপ্তাহ আমরা একসাথে থেকেছি। কেনায়া তালাক সম্পর্কে জানতাম না। তাই মাথায় কিছুই আসে নি আমার। ভেবেছি রাগ করে অভিমানের বহিঃপ্রকাশ। অথবা-
১। আমি মাঝে মাঝে উনাকে বলি এই সব যে, কোনোদিন যদি আমাকে ভালো না লাগে তাহলে উনি বলতে পারে, আমি জোর করে থাকতে চাইব না। যেহেতু আমি এগুলো বলি তাহলে উনিও হয়তো সে অর্থেই বলেছে। মানে উনিও জোর করবেন না। আমি চাইলে যেতে পারি। এরকম আরকি। চলে যেতেই বলেছে তালাক অর্থে তার কিছুই মাথায় আসেনি। দুই সপ্তাহ পরে কেনায়া তালাক সম্পর্কে শুনি। পরে উনাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে, ১। তালাকের নিয়ত ছিলো না, কথার ফ্লোতে বলেছি। রাগ করে বলেছি। ২। আরেকবার বলে, কতটা দিন আগের কথা মনে নেই কি ভেবে কি বলেছি। ৩। আমি উনাকে কোনো মুফতিকে জিজ্ঞাসা করতে বললে উনি বলে কেও যদি আমার মনের কথা পড়তে পারে তাহলেই বলবো, আমি এ ধরণের কোনো নিয়তই রাখিনি।
আমার প্রশ্ন, এটা কি তালাকের পর্যায়ে পড়বে, যেহেতু আমি নিজেও তখন কিছুই বুঝিনি।
নিবেদক
মুহা. হুমায়রা জাহান মিম
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি সঠিক হয়ে থাকে এবং আপনার স্বামীর যদি তালাকের নিয়ত না থাকে তাহলে আপনার স্বামীর বক্তব্যের কারণে আপনার উপর কোন তালাক কার্যকর হয়নি। কারণ এ ধরণের বক্তব্য দ্বারা তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তালাকের নিয়ত থাকা শর্ত। আর তা এখানে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া অতিতের রাগ অভিমানের সময় যে সকল কথা-বার্তা হয়েছে যেগুলোর নিয়ত সম্পর্কে জানা নেই বা ভুলে গেছে সে সকল কথা-বার্তার কারণেও কোন তালাক কার্যকর হবে না।
الإحالة الشرعية على المطلوب-
في “الدر المختار” (4/516) فالكنايات لا تطلق بها قضاء إلا بنية أو دلالة الحال وهي حالة مذاكرة الطلاق أو الغضب‘ فالحالات ثلاث: رضا و غضب و مذاكرة‘ والكنايات ثلاث: ما يحتمل الرد‘ أو ما يصلح للصب أو لا و لا. فنحو أخرجي‘ واذهبي و قومي ……يحتمل ردا………وفي مذاكرة الطلاق يتوقف الأول فقط. وقال الشامي تحت قوله “يتوقف الأول فقط” أي ما يصلح للرد والجواب‘ لان حالة المذاكرة تصلح للرد والتبعيد كما تصلح للطلاق دون الشتم وألفاظ الأول كذالك فإذا نوى بها الرد لا الطلاق فقد نوى محتمل كلامه بلا مخالفة للظاهر فتوقف الوقوع على النية.
وفي “الهندية” (1/442) وفي حالة مذاكرة الطلاق يقع الطلاق في سائر الأقسام قضاء‘ إلا فيما يصلح جوابا وردا فإنه لا يجعل طلاقا…….ولو قال لها: اذهبي أي طريق شئت‘ لا يقع بدون النية‘ وإن كان في حال مذاكرة الطلاق
وفي “الهداية” (٢/٣٧٤) الكنايات إذا نوى بها الطلاق كانت واحدة بائنة وإن نوى ثلاثا كان ثلاثا وإن نوى ثنتين كانت واحدة بائنة وهذا مثل قوله الحقي بأهلك وأخرجي وإذهبي وقومي لأنها تحمل طلاق وغيره فلا بد من النية
وفي “دار العلوم دیوبند” (٩/٤٥٦) سوال: اگر کوئی شخص غصہ میں عورت کو کہیں چلی جا نکل جا تو ان الفاظ سے طلاق ہو جاتی ہے یا نہیں؟
جو اب :اپنی زوجہ کو چلی جا نکل جا کہنے سے اگر نیت طلب کی ہے طلاق ہو جاتی ہے ورنہ نہیں
وفي “احسن الفتاوى” (٥/١٤٩) سوال: ایک شخص نے اپنی عورت کو کہا کہ “اپنے میکہ چلی جاؤ” تو طلاق ہوئی یا نہیں؟ جو اب: اگر طلاق کی نیت سے کہا تو طلاق بائن ہوگی ورنہ نہیں
وراجع أيضا في “التاتارخانية” (4/459)‘ وفي “قاضيخان”(7/284)…انتهى، والله أعلم بالصواب