বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: ভিডিও কলে বিবাহ প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: ভিডিও কলে বিয়ে। ছেলে মালোশিয়া এবং মেয়ে বাংলাদেশে থাকে। ওই ছেলে ব্যক্তি তার আপন চাচাকে বলে যে, আমি অমুক মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। আমার পক্ষ থেকে তুমি যাবে যেটা যেটা করা লাগবে তুমি করবে। চাচা বলে, আচ্ছা আমি যাবো। মেয়ের ফ্যামিলির ৫ জন উপস্থিত ছিলো আর ছেলের পক্ষ থেকে শুধু তার চাচা ছিলো। তখন কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর কাজ শুরু করে খুতবা পড়ে। কাজী সাহেব ওখান থেকে ভিডিও কলে বলছিলো যে, তুমি যদি অমুকের মেয়ে অমুককে বিয়ে করতে রাজি থাকো তাহলে বলো “কবুল”। ছেলে তিন বার “কবুল” বলে মেয়েকে। কাজী যখন মেয়েকে বলেছিল, এই ভরা মজলিসে এই সাক্ষীদের সামনে তুমি কি (ছেলের নাম নিয়ে বলছিলো ) অমুককে বিয়ে করতে রাজি আছো? তাহলে বলো, “কবুল”। মেয়েও তিনবার বলেছিলো “কবুল”। কিন্তু এখন চাচার থেকে জানতে চাইলাম যে, তোমাকে কি ঐখানে উকিল হিসেবে রাখছিলো? বা কাজী কি তোমাকে উকিল বানিয়ে ছিলো? বা কাজী সাহেব কি তোমাকে বলেছিল যে, ছেলের পক্ষের উকিল তুমি? ছেলের চাচা বলে, না, আমাকে ওই রকম কিছু বলে নি। শুধু বলেছিল কাজী সাহেব যে, তোমার ভাতিজা যে বিয়ে করতে চাচ্ছে, তুমি কি রাজি আছো? ছেলের চাচা বলেছিলো যে, হুম আমি রাজি আছি। আমার চাচা শুধু ঐখানে সাক্ষী হয়ে সই দিয়েছিলো। ছেলেও কি তার চাচা কে উকিল হিসেবে ওইখানে যাইতে বলেছিলো নাকি তা শিউর না কিন্তু ছেলে চাচাকে বলেছিলো আমার পক্ষ থেকে তুমি যাবে এবং যা যা করা লাগবে তুমি করবে। এখন কাজী এবং যে হুজুর বিয়ে পড়াইছিলো তার সাথে কথা বলে যতটুকু জানা গেলো যে, সাধারণভাবে যেইভাবে বিয়ে পড়ানো হয় সেইভাবে সেই বিয়ে পড়াইছে এবং বলতেছে বাসর এর আগে আবার একবার ইজাব ও কবুল করা লাগবে। কাজীর কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে যে, হয়তো কাজী এবং ঐহুজুর জানেই না মোবাইলে বিয়ে করার পদ্ধতি ভিন্ন। এখন কি এই বিয়ে বৈধ হয়েছিলো? চাচাকে তো ছেলেই বলেছিলো যে, আমার বিয়ে তে তোমাকে থাকতে হবে যা যা করা লাগবে তুমি করবে। এটা তো সেই ছেলেই চাচা কে বলেছিলো।
নিবেদক
মুহা. রফিক।
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত পদ্ধতির বিয়েটি শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ হয়নি। কেননা বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য সাক্ষীদের সম্মুখে ইজাব ও কবুলের মজলিস এক হওয়া শর্ত। যা এখানে পাওয়া যায়নি। তাই পুনরায় সঠিকভাবে বিবাহ করতে হবে।
উল্লেখ্য: ফোনে বিয়ে করতে চাইলে করণীয় হল, ছেলে এ দেশে তার বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য একজন উকিল তথা প্রতিনিধি নিযুক্ত করবে। ঐ উকিল বিবাহের মজলিসে উপস্থিত হয়ে সাক্ষীদের সম্মুখে ছেলের পক্ষ থেকে ইজাব ও কবুলের মাধ্যমে বিবাহকার্য সম্পন্ন করবে।
الإحالة الشرعية على المطلوب-
في “الدر المختار” (٤/٨٦) ومن شرائط الايجاب والقبول: اتحاد المجلس لو حاضرين وإن طال
وفي “البحر الرائق” (٣/١٤٨) شرائط الايجاب والقبول فمنها اتحاد المجلس إذا كان الشخصان حاضرين فلو اختلف المجلس لم ينعقد
و في “الدر المختار”(٤/٩٨) وشرط حضور شاهدین حرين أوحر و حرتين مکلفین سامعین قولهما معا على الأصح
وفي “الهندية” (١/٣٣٤) ومنها أن يكون الايجاب والقبول في مجلس واحد، حتى لو اختلف المجلس بأن كانا حاضرين، فأوجب أحد هما فقام الآخر عن المجلس قبل القبول، أو اشتغل بعمل يوجب اختلاف المجلس لا ينعقد وكذا إذا كان أحد هما غائبا لم ينعقد
وفی “فتاوی قاسمیه” (١٣/١١٧) سوال: ٹیلیفون کے ذریعہ نکاح درست ہے یا نہیں؟ مثلا لڑکا دہلی میں رہتا ہے اور لڑکی ممبئی میں تو اب ان دونوں کے درمیان ٹیلیفون کے ذریعہ نکاح درست ہوگا یا نہیں؟جواب: ٹیلیفون پر نکاح جائز نہیں ہے کیونکہ نکاح کی صحت کے لئے مجلس عقد اور حضور شاہدین شرط ہے، جو ٹیلیفون کی صورت میں ممکن نہیں ہے، اس لئے ٹیلیفون پر نکاح نہ ہوگا؛ البتہ ٹیلیفون پر نکاح کے لئے یہ صورت ہو سکتی ہے کہ ٹیلیفون کے ذریعہ لڑکا یا لڑکی کی جانب سے کسی مہ متعارف آدمی کو وکیل بنا دیا جائے، پھر وہ متعارف شخص دو گواہوں کے سامنے لڑکا یا لڑکی یا ان کے اولیاء سے ایک مجلس میں ایجاب و قبول کرلے، پھر اس کی اطلاع ٹیلیفون پر دوسرے کو دیدی جائے، تو اس طرح نکا صحیح ہو سکتا ہے
وراجع أيضا في فتاوى رحیميه (٨/١٨٣) وفي فتاوی محمودیه (١٦/٢٢٥) ..انتهى، والله أعلم بالصواب