বরাবর,
ফাতওয়া ও ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ,আল জামি’আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া, পোরশা, নওগাঁ।
বিষয়: তালাক ও মিথ্যা কসম প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। বাংলাদেশ কাবিন নামার ১৮ নং কলামে কাজী না জানিয়ে বিয়ের আগে সাইন নিয়ে ১৮ নং কলামে ” পারিবারিক ও মুসলিম আইন ” লিখে রাখে। পরে স্বামী গুগলে সার্চ করে পারিবারিক ও মুসলিম আইনে কিছু শর্ত লিখা দেখে। পরে যখন স্ত্রী কাবিন নামা হাতে পেয়ে স্বামীকে জিজ্ঞেস করে “অধিকার দাওনি? “তখন স্বামী ১৮ নং কলামকে খোলা তালাকের অনুমতি ভেবে বলে,হ্যা! দিয়েছি তো। যদি আমি ভরন-পোষণ না দেই ; শারীরিক মানসিক অত্যাচার করি ; নিখোজ হই ; অক্ষম হই তাহলে তুমি তালাক নিতে পারবা। ( গুগলে পড়া শর্তগুলো বলে) সে মুলত ১৮ নং কে খোলা তালাকের অনুমতি ভাবে এবং এটা বলে। বলার সময় তার মনে কোন সংখ্যার নিয়ত ছিলো না।
এতে স্ত্রী ১৮ নং কলামের অধিকার পেলো? পেলেও কতো তালাকের? আর সেখানে কি স্বামীর বলা শর্ত যুক্ত হবে?
একটি ঘটনা :
আমি আমার এক বান্ধবী এর সাথে মিথ্যাচার করি। আমি যে মিথ্যা বলেছি তা বুঝে ফেলে বান্ধবী। এক পর্যায়ে সম্মান এর ভয়ে আমাকে দায় ঠেকে কসম করতে হয়। আমি দায় পরে মিথ্যা কসম করে বলি ” মিথ্যে বললে ডিভোর্স হবে / মিথ্যে বললে যেন ডিভোর্স হয়” ২ টার একট বলেছি। ২ টাই ছিলো ভবিষ্যৎ কালীন বদ-দুআ। মনে মনে আল্লাহ কে বলতেছিলাম যেন সমস্যা না হয় কোন। আমার মিথ্যা কসমের জন্য কি আমার ওপর তালাক অর্পন হয়ে গেছে?
নিবেদক
মুহা.লামিয়া আক্তার
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ অনুযায়ী ১৮নং কলামে উল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে স্ত্রী তালাক গ্রহেণের অধিকার প্রাপ্ত হয়েছে। সুতরাং শর্ত পাওয়া যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্ত্রী তালাক গ্রহণের অধিকার প্রাপ্ত হবে না। আর স্বামীর যেহেতু কোন তালাকের সংখ্যার নিয়ত ছিল না তাই শর্ত পাওয়া গেলে কেবলমাত্র এক তালাক গ্রহণের অধিকার প্রাপ্ত হবে। একের বেশি নয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ১৮ নং কলামে উল্লিখিত শর্তগুলো পাওয়া যায়নি তাই আপনার তালাক গ্রহণ ও সহীহ হয়নি।
তবে আপনার মিথ্যা কসমের দ্বারা মারাত্মক কবিরা গুনাহ হয়েছে। এ কারণে আপনার উপর কোন আর্থিক কাফফারা আবশ্যক নয়।
উল্লেখ্য, মিথ্যা কসম খুবই মারাত্মক কবিরা গুনাহ। কেননা এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার নামের অসম্মান করা হয়। এর কাফফারা শুধুমাত্র খাঁটি মনে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। এ কারণে আপনার উচিত হল খাঁটি দিলে আল্লাহর কাছে তওবা ও ইস্তিগফার করা করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কসম না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
الإحالة الشرعية على المطلوب
في”الهندية”(1\396 شاملة) والثاني – تعليق التفويض بالشرط، وأنه أقسام) أحدها – تعليق التفويض بالغيبة وصورة كتابة هذا القسم شهدوا أن فلانا جعل أمر امرأته فلانة بيدها معلقا بشرط أنه متى غاب عنها من كورة كذا أو من مكان كذا يسكنان فيه غيبة سفر ومضى على غيبته عنها شهر أو كذا على ما شرطاه، ولم يعد إليها في هذه المدة فإنها تطلق نفسها تطليقة واحدة بائنة بعد ذلك متى شاءت أبدا وفوض الأمر في ذلك إليها، وأنها قبلت منه هذا الأمرقبولا صحيحا في مجلس التفويض ويتم الكتاب
في “الدر المختار”(3\330)جعل أمرها بيدها إن ضربها بغير جناية، فضربها ثم اختلفا فالقول له لأنه منكر وتقبل بينتها على الشرط المنفي
في “الدر المختار”(3\706) (إن حلف على كاذب عمدا) ولو غير فعل أو ترك كوالله إنه حجز الآن في ماض (كوالله ما فعلت) كذا (عالما بفعله أو) حال (كوالله ما له علي ألف عالما بخلافه والله إنه بكر عالما بأنه غيره) وتقييدهم بالفعل والماضي اتفاقي أو أكثري (ويأثم بها) فتلزمه التوب
في”الهندية”(2\57)(اليمين بالله ثلاثة أنواع) غموس، وهو الحلف على إثبات شيء، أو نفيه في الماضي، أو الحال يتعمد الكذب فيه فهذه اليمين يأثم فيها صاحبها، وعليه فيها الاستغفار، والتوبة دون الكفارة
في”الهندية”(5\274) التفويض المعلق بشرط إما أن يكون مطلقا عن الوقت وإما أن يكون موقتا….والمعلق بالشرط يصير مرسلا عند وجود الشرط ولو أرسل التفويض بعد مضي الشهر يقتصر على مجلس علمه فكذا هذا ولو قال أمر امرأتي بيد فلان وفلان إذا مضى شهر ثم مضى شهر ثم علم أحدهما فقام قبل الطلاق بطل الأمر فإن طلق فهو موقوف حتى يعلم الآخر فإن طلق في مجلس العلم يقع وإلا بطل كذا في محيط السرخسي
في”امداد السائلين”(3\551) جواب: صورت مذکورہ میں اگر محمد اسحاق نے واقعی مذکورہ بالا شرائط کی پا بندی نہیں کی یا کسی ایک شرط کی خلاف ورزی کی ہے تو مسماۃ بیدار بی بی اس خلاف ورزی کا ثبوت کسی پنچایت یا عدالت کے سامنے پیش کردے ثبوت پیش کنے کے بعد مسماۃ بیدار بی بی کر اختیار ہوگا کہ اپنے اوپر ایک طلاق بائنہ واقع کر لے طلاق واقع کرنے کے بعد عدت طلاق گزار کر دوسرا نکاح کسی مرد سےکر سکتی ہے –انتهي و الله تعالي اعلم بالصواب