আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

হিন্দু মেয়েকে বিবাহ করা প্রসঙ্গে।

( ফতোয়া ও মাস‘আলা-মাসায়েল : পোস্ট কোড: 18552 )

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: হিন্দু মেয়েকে বিবাহ করা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন মুসলমান। আমার স্ত্রী এবং দুটো সন্তান আছে। একটা হিন্দু মেয়ে আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং আমাকে বিয়ে করে সে মুসলমান হতে চায়। তার‌ও স্বামী আছে এবং একটা সন্তান আছে। এমতাবস্থায় আমার করণীয় এবং এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে ? তাকে কি আমি গ্রহণ করতে পারবো নাকি ছেড়ে দেবো ? দয়া করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।।
নিবেদক
মুহা. ফারুক হোসেন
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: ইসলামে বিবাহ বহির্ভূত কোন বেগানা নারীর সাথে সর্ম্পক রাখা দেখা-সাক্ষাৎ করা, কথা বলা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও মারাত্মক কবীরা গুনাহ। বিশেষ করে বিবাহের পর পরকীয়া এটি আরো মারাত্মক কবীরা গুনাহ ও ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। এর দ্বারা একটি পরিবারই শুধু ধ্বংস হয় না বরং দ্বীন-দুনিয়ার মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। যা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অতএব, আপনার উচিত হল, ঐ মেয়ের সাথে সকল প্রকারের সম্পর্ক ছিন্ন করা। আর আপনার কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
যেহেতু আপনার স্ত্রী এবং সন্তান রয়েছে তাদের হক আদায়ে মনোনিবেশ করা। একজন স্ত্রী দ্বারাই যদি আপনার প্রয়োজন পুরা হয়ে যায় এবং বাস্তবেই যদি দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রয়োজন না হয় তাহলে ‍দ্বিতীয় বিবাহ থেকে বেঁচে থাকা ভাল। কেননা অনেকের ক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রীর হক আদায় ও সমতা রক্ষা কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে যদি এ ব্যাপারে নিজের উপর পূর্ণ আস্থা না থাকে এবং রাত্রি যাপন, সমান সমান প্রয়োজনীয় খরচাদি, উভয়ের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় ইত্যাদি হক পরিপূর্ণভাবে আদায় না করার প্রবল আশঙ্কা থাকে তাহলে দ্বিতীয় বিবাহ বৈধই হবে না।
আর যদি বাস্তবেই আপনার দ্বিতীয় বিবাহের প্রয়োজন হয় এবং উভয় স্ত্রীর হক আদায়ের সামর্থ্য থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি ঐ হিন্দু মেয়েকে বিবাহ করতে চাইলে প্রথমে তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। কেননা হিন্দু মেয়েকে হিন্দু থাকা অবস্থায় বিবাহ করা বৈধ নয়। এ ক্ষেত্রে আপনার করণীয় হল, ঐ মেয়েকে সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা। এখন ঐ মেয়ে যেহেতু বিবাহিত তাই সর্বপ্রথম আর স্বামীর থেকে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার যে পদ্ধতি রয়েছে সেটি অবলম্বন করতে হবে। এটি ডিভোর্স লেটারের পাঠানোর মাধ্যমে বা অন্য কোন মাধ্যমেও হতে পারে। প্রয়োজনে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য বিজ্ঞ উকিলের পরামর্শ গ্রহন করা যেতে পারে। পূর্বের স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর ইদ্দত পালন করতে হবে অথাৎ ঋতুমতী হলে তিনটি ঋতু আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব করার পর উপযুক্ত দুইজন সাক্ষীর সামনে মহর নির্ধারণ করে আপনারা দু’জন নতুনভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।

الإحالة الشرعية على المطلوب
قوله تعالى: ولا تنكحوا المشركت حتى يؤمن (سورة البقرة.٢٢١).
في “النتف في الفتاوي” (198) فاما الذي في دار الاسلام فهو على ثلاثة اوجه والثالث ان تسلم المرأة ولا يسلم الرجل فان الزوج يعرض عليه الاسلام فان اسلم فهما على نكاحهما وان ابي فرق بينهما ولها المهر ان كان دخل بها ونصف المهر ان لم يكن دخل بها لان الفرقة جاءت من قبله فان لم يترافعا الينا حتى حاضت ثلاث حيض وقعت الفرقة بينهما في قول ابي عبد الله ومالك والشافعي ولا تقع في قول ابي حنيفة واصحابه ما لم يعرض عليه الاسلام ويأبى ويفرق السلطان بينهما
و في “الهداية”(٢/٤٠٢) لأن الامتناع عن قربانها في أكثر المدة بلا مانع وبمثله لا يثبت حكم الطلاق فيه
و في “التاتاخانية”(٥/٢٢٦) والعدة تجيب على المطلقة وكذا في الفرقة بالنكاح الفاسدة وكذلك بالوطي بالشبهة النكاح أو بالخلوة الصحيحة والفرقة بلا طلا
وفي “رد المحتار”(٤/٣٤٧) وأنه تثبت بقية أحكام النكاح في حقهم كالمسلمين من وجوب النفقة في النكاح ووقوع الطلاق ونحوهما كعدة ونسب.
وفي “فتاوى عثماني”(2\265-266)  کافر شوہر کے نکاح سے نکلنے کے لۓ یہ ضروری ہے کہ عدالت میں دعوی کر کے شوہر پر اسلام پیش کیا جاۓ۔وہ انکار کرے تو قاضی تفریق کردے۔اس کے بغیر عورت کا دوسری جگہ نکاح نہیں ہو سکتا ہے اور عورت شوہر سے جان کا خطرہ ہو تو مسلمان کی پناہ حاصل کر لے۔ہاں اگر شوہر نے خود طلاق دے دی ہو تو اسلام لاتے ہی نکاح کر سکتی ہے لیکن محض گھر سے نکال دینے سے طلاق نہ ہوگی تاوقتیکے شوہر کی مذہب میں اس کو طلاق نہ سمجھا جاتا ہو اور اگر ملکی قوانین کی رو سے ایسا طریق کار موجود نہ ہو جس کے ذریعے عدالت شوہر کو بلا کر اس پر اسلام پیش کرے تو اس صورت میں عورت عدت گزار کر دوسری جگہ نکاح کی گنجائش ہوگی..انتهى، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

 

Fatwa ID: 18552
Scroll to Top