আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

হুরমতে মুসাহারা প্রসঙ্গে

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া, পোরশা, নওগাঁ।
বিষয়: হুরমতে মুসাহারা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ, হযরত মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন, হযরত আমি একজন আলেম মানুষ কিন্তু আমি ওয়াসওসায় আক্রান্ত ব্যাক্তি এক সময় অজু গোসলে ওয়াসওসা ছিলো, বিয়ের পর থেকে তালাক ও হুরমতে মুসাহারার ওয়াসওসায় আক্রান্ত হয়ে যাই। কয়েকমাস আগের ঘটনা, আমি আমার শশুর বাড়িতে ছিলাম, হঠাৎ একটা বিষয়ে আমার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয় তারপর সে রাগ হয়ে রাতের বেলায় আমাদের বাড়িতে চলে যেতে রেডি হতে লাগলো, রাত বেশি হওয়ায় আমি তাকে বাধা দিচ্ছিলাম কিন্তু সে মানতেছিলো না। তখন আমার শাশুড়ি আমার রুমে এসে তাকে বুঝাতে থাকে আর এতে সে তার মায়ের সাথেও খারাপ আচরণ করে এবং সরে যেতে বলে, আমার শাশুড়ি যাচ্ছে না দেখে আমি তার হাতের কব্জির উপরে ধরে সরাইয়া দেওয়ার পরেও উনি যাচ্ছিলো না, পরে আমি তার হাতের বাহু ধরে সরাইয়া দিলাম এতে করে উনি চলে গেলেন, এসময়ে তার কব্জি ধরার সময় আমার শুধু অনুভব হয় যে, তার হাতটা পচুর ঠান্ডা, তার পরে বাহু ধরার সময়ে আমার মনে হলো বয়স হওয়ার কারণে তার শরীরের গোস্ত গুলো ঢিলা হয়ে গেছে। এইসকল ক্ষেত্রে কোনো সময়েই আমার মনে তার ব্যপারে শাহওয়াত ছিলো না। তবে কব্জির উপরে সরাসরি ধরি আর বাহুতে ধরার সময়ে তার ব্লাউজ ও কাপড় ছিলো এগুলোর উপর দিয়ে ধরি, তার পরে থেকেই আমি ওয়াসওসায় আক্রান্ত হয়ে যাই যে আমাদের হুরমতে মুসাহারা হলো কি না? আমি তো আমার শাহওয়াত না থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত কিন্তু তিনার শাহওয়াত এসেছিল কিনা তা নিয়ে খুব চিন্তিত। তাকে জিজ্ঞেস করতেও পারতেছি না। উল্লেখ্য উনার বয়স ৬০ এর মত হবে। উক্ত বিষয়ে শরিয়তের আলোকে সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।
নিবেদক
মুহা: বেলাল হোসাইন
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী আপনার শাশুড়িকে ধরার সময় যেহেতু আপনার শাহওয়াত ছিল না এবং শাশুড়ির মধ্যে শাহওয়াত আসার বিষয়টিও নিশ্চিত নয় তাই এক্ষেত্রে হুরমতে মুসাহারা সাব্যস্ত হবে না এবং আপনার স্ত্রী আপনার জন্য হারামও হবে না। কেননা হুরমতে মুসাহারা সাব্যস্ত হওয়ার জন্য শাহওয়াত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। আর এখানে তা পাওয়া যায়নি।
জেনে রাখা উচিত যে, ওয়াসওয়াসা হলো শয়তানের পক্ষ থেকে কুমন্ত্রণা। এর দ্বারা শয়তানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঈমানদারকে সর্বক্ষণ চিন্তা পেরেশানিতে আবদ্ধ রাখা। এর প্রতিকার হচ্ছে সেদিকে একেবারেই ভ্রুক্ষেপ না করা, বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা, তাওবা ইস্তেগফার করা, গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা, এবং নিম্নে বর্ণিত দোআগুলো বেশি বেশি পড়া।
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ (١)
উচ্চারণ: “আউযুবিল্লাহি মিনাশ্ শায়তানির রাজীম”।
(٢) رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِين وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ ( سورة المؤمن ٩7 -٩٨ )
উচ্চারণ: “রাব্বি আউযুবিকা মিন হামাযাতিশ্ শায়াতীন ওয়া আউযুবিকা রাব্বি আই ইয়াহ্‌দুরুন”।
(3) آمنت بِاللَّهِ وَ رَسوله
উচ্চারণ: “আমানতু বিল্লাহি ওয়া রাসূলিহি”।

الاحالة الشرعية على المطلوب
في الدر المختار(4/119) وفي المس لا تحرم مالم تعلم الشهوةلإن الاصل في التقبيل الشهوة بخلاف المس
وفيه أيضا(4/121) وإن ادعت الشهوة في قبيله او تقبيلها إبنه وأنكرها الرجل فهو مصدق لا هى
وفي الهندية(1/341) وإذا قبلها ثم قال لم يكن عن شهوة أو لمسها أو نظر الى فرجها ثم قال لم يكن عن شهوة فقد ذكر الصدر الشهيد في التقبيل يفتى ثبوت الحرمة ما لم يتبين أنه قبل بغير شهوة وفي المس والنظر إلى الفرج لا يفتى بالحرمة
وفي “المحيط البرهانى “(4/90) وفي البقالى: ويصدق إذا أنكر الشهوة يعنى المس
وفي”ردالمحتار” (4/113) (وتكفى الشهوة من أحدهما) هذا إنما يظهر فى المس
وفيه أيضا(4/91) وإن اختلفا فا لقول الزوج لأنه ينكر ثبوت الحرمة والقول قول المنكر
وفی” کتاب النوازل” (8/284) شہوت کے ساتھ بدن کے کسی حصہ کو چھو نا
وفی”دارالعلوم کراچی” (3/277) جواب:….. البتہ حرمت ثابت ہونے کے لئے چند شرائط ہیں …. (2) یہ شہوت کے ساتھ ہوا ہو ، شہوت کا مطلب یہ ہے کہ عضو مخصوص میں اس وقت حرکت پیدا ہوئی ہو ، اگر پہلے سے حرکت موجود تھی تو اس وقت حرکت میں اضافہ ہو گیا ہو، اگر شہوت اس درجے میں نہیں تھی محض دل میں لذت کا احساس تھا تو حرمت ثابت نہیں ہوئی.-  انتهى ، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

Scroll to Top