বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: মেয়েদের কল সেন্টারে চাকরি প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: একটা মেয়ে যার ছদ্মনাম আয়েশা, যাকে বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু বিবাহ হচ্ছে না, এটা নিয়ে তার পরিবার একটু চিন্তিত, এছাড়া তার পরিবারে পাঁচটি বোন, যার মধ্যে তিনটা বোনের এখনো বিবাহ হয় নাই, এবং তাদের কোন ভাই নাই এবং বাবা বৃদ্ধ এবং বাবা তিন মাস পর চাকরি থেকে রিটায়ার্ড করবেন অর্থাৎ তিন মাস পর তার চাকরি শেষ হয়ে যাবে, এবং তাদের জমানো খুব বেশি সম্পদ যেটা দিয়ে বৃদ্ধ বয়সে কোন ধরনের উপার্জন ছাড়া চলতে পারে, আয়েশা কিছুদিন ধরে একটা চাকুরী করে। যেখানে ছেলে মেয়ে উভয় রয়েছে, এবং অনেক ক্ষেত্রে একজন মেয়েকে একজন ছেলের সঙ্গে কথা বলতে হয় অথবা সাহায্য নিতে হয় কাজের ক্ষেত্রে। এবং তার যে কাজ সে কাজটা হলো, বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে হয় অর্থাৎ কল সেন্টারের কাজ। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন সমস্যার জন্য অফিসের নাম্বারে ফোন দেয় ফোন কলের মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান দেওয়াই হল আয়েশার কাজ, অর্থাৎ আয়েশা যে কাজটি করে সেটি হল গাইরে মাহরামদের সাথে ফোন কলে নরম ভাষায় কথা বলার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান দেওয়া।
এখন আমি ওকে বলি তুমি চাকরিটা ছেড়ে দাও, ওর আম্মুও বলে চাকরিটা ছেড়ে দিতে কিন্তু ওর আব্বু চাকরিটা ছাড়তে নিষেধ করে, আব্বু অনেক টেনশন করে তিন মাস পর তার চাকরি শেষ হয়ে গেলে কি হবে, তাছাড়া বিবাহ দিতে পারতেছে না, শুধু শুধু ঘরে বসে থাকবে মানুষ কি বলবে, ইত্যাদি আরো অনেক কিছু ভেবে ওর আব্বুও চাকরি ছাড়তে নিষেধ করে।
এমতাবস্থায় ও ভাবে আব্বু যেহেতু টেনশন করে আমি চাকরি ছেড়ে দিলে আব্বু তো আরো বেশি টেনশন করবে, এভাবে টেনশন করতে করতে যদি আব্বুর কিছু হয়ে যায়, এটা ভেবে চাকরি ছাড়তে চাচ্ছে না।
এখন আমার প্রশ্ন হল, এই পরিস্থিতিতে আয়েশা কি চাকুরী করতে পারবে?
উল্লেখ্য, সে বোরকা পরে হিজাব পরে হাত মোজা পা মোজা পড়ে অফিসে যায়।
নিবেদক
মুহা.তরিকুল ইসলাম।
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত চাকরিটি তার জন্য বৈধ হবে না। কেননা এ ধরনের চাকরি মেয়েদের জন্য বৈধ নয়। এর পরিবর্তে শরীয়ত সমর্থিত নারী বান্ধব কোন বৈধ চাকরি সে গ্রহণ করতে পারে। আর এখনই চাকরি ছাড়ার কারণে যদি তার পিতা বা পরিবারের কোনো সদস্যের বাস্তবেই বড় ধরনের কোন ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলে বৈধ চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান চাকরিটি করার অবকাশ রয়েছে এবং এর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা ইস্তেগফারও করবে আর সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে বৈধ চাকরি খুঁজতে থাকবে। আর যদি পরিবারের সদস্যের কারো বড় কোন ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে তাহলে উক্ত চাকরিটি এখনই ছেড়ে দিতে হবে।
الإحالة الشرعية على المطلوب-
قوله تعالى في “سورة الأحزاب”(٣٢-٣٣) فلا تخضعن بالقول فيطمع الذي في قلبه مرض وقلن قولا معروفا وقرن في بيوتكن ولا تبرجن تبرج الجاهلية الأولى
أخرج الإمام الترمذي في “سننه” (١/٢٢٢ برقم-١١٧٣) عن عبد الله رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: المرأة عورة فإذا خرجت استشرفها الشيطان
في”مجمع الأنهر” (١/١٢٢) (وجميع بدر الحرة عورة إلا وجهها وكفيها وقدميها في رواية) وفي رواية إنها عورة وفي الإختيار إنها ليست بعورة في الصلاة وعورة خارج الصلاة
وفي”الموسوعة الفقهية” (٤١/١٣٤) قال الحنفية: تمنع المرأة الشابة من كشف وجهها بين الرجال في زماننا لا لأنه عورة بل لخوف الفتنة وقالوا: يجب على الشابة مخشية الفتنة ستر حتى الوجه والكفين إذا كانت جميلة او يكثر الفساد
وفي “البحر الرائق” (١/٤٧٠) قال مشايخنا: تمنع المرأة الشابة من كشف وجهها بين الرجال في زماننا للفتنة……. وصرح في النوازل: بأن نغمة المرأة عورة وبنى عليه أن تعلمها القرآن من المرأة أحب الي من تعلمها من الأعمى، ولهذا قال النبي صلى الله عليه وسلم “التسبيح للرجال والتصفيق للنساء” فلا يجوز أن يسمعها الرجل….. ولا تلبية جهرا لأن صوتها عورة
وفي “امداد الفتاوى” (٩/٢٢٩) اور حرہ کو تمام اعضاء کا پردہ فرض ہے بجز چہرہ اور کفین اور قدمین کے اور آواز میں اختلاف ہے، مگر صحیح یہ ہے کہ وہ عورت نہیں، مگر جوان عورت کو بے ضرورت اعضائے غیر مستورہ کا اجنبی کو دکھانا اور بدون حاجت اس سے کلام کرنا منع ہے نہ اس وجہ سے کہ ستر ہے بلکہ خوف فتنہ
وفي “كتاب النوازل” (١٦/١٧٢) ایسی تجارت یا نوکری جس میں بے پردگی لازم آتی ہو، عورتوں کے لئے کسی بھی صورت میں جائز نہیں؛ البتہ اگر ایسی ملازمت ہو جس میں بے پردگی کا خدشہ نہ ہو مثلا بچیوں کے اسکول میں تعلیم دینا وغیرہ تو اس گنجائش ہے
وفي “فتاوى قاسمية” (٢٤/٤١٩) عورت کے لئے بے پردہ سرکاری ملازمت کرنا بہت برا ہے، غیرت انسانی کے خلاف ہے، تاہم کوئی عورت ملازمت کرتی ہے، اس کے عوض ملنے والی تنخواہ اس کی ذاتی ملکیت ہے، اس کو جس طرح چاہے خرچ کر سکتی ہے، چاہے اپنے اوپر خرچ کرے یا شوہر پر خرچ کرے یا اس کی مشورہ سے دوسرے رشتہ داروں پر خرچ کریں تو اس کی اجازت ہے.انتهى، والله أعلم بالصواب