বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়:বিবাহের আগে তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: একটি মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন হারাম রিলেশন ছিল এখন আমাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু রিলেশন চলাকালীন আমি তাকে বহুবার বলেছি তোমাকে ছেড়ে দিলাম আল্লাহর নামে,তোমার সাথে ব্রেকাপ,তোমার সাথে সারা জীবনের জন্য সব সম্পর্ক শেষ করে দিলাম,তুমি আমার মন থেকে উঠেগেছ সারাজীবন এর জন্য,,এঅন্য জনের সাথে বিয়ে করে সুখে থাকোকবার বলেছিলাম তোমার সথে ব্রেকাপ,ব্রেকাপ,ব্রেকাপ ৩ বার,এখন বিয়া হলে তালাকও দিয়ে দিতাম,আমুক কাজ করলে ওই দিনের পর থেকে সম্পর্ক থাকবে না,বিয়ের আাগে না পরে এটা উল্লেখকরি নাই সাধারন ভাবেই বিয়ের আগের সম্পর্ক ব্রেকআপের কথা বলতাম এই কথা বলার পরেও সে ওইকাজ করেছিল কিন্তু আমি সম্পর্ক ছিন্ন করি নাই, আবার বিয়ের কথা উল্লেখ করেও এভাবে বলতাম অমুক কাজ করলে বিয়ের পর তালাক দিবো, আমি তোমাকে বিয়ে করবো কিন্তু আমার ভয় হয় যদি তুমি এমনই থাকো আর আমাদের এত ঝগরা হয় তাহলে তো ডিভোর্স হয়ে যাইবো, আমার মনে হয় আমাদের বিয়ে হলে ভিভোর্স হয়ে যাইবো,আমার সাথে বিয়ের পর যদি ঝগরা লাগে আর এই ভাষায় কথা বলো হয় আমার মাইর খাইয়া মরবা নাহলে তলাক হইবো,(এইখানে ডিভোর্স হইবো বা হয়েযাইব বলতে বুঝিয়ে ছিলাম যে ২ জনের মধ্যে কেউ হয়তো ডিভোর্স দিবে), আমি যদি এমন কিছু শুনি তহলে কিছু চিন্তা করবো না সোজা তালাক,বিয়ের প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন বলেছিলাম এমন চলতে থাকলে দেখবা শেষমেশ ডিভোর্স, এই রকম অনেক কথা বলতাম এখন সে যদি বিয়ের আাগে বা পরে ঐ কাজ গুলো করে তাহলে কি সত্যি সত্যি তালাক হয়ে যাবে, ওই কথা গুলো কি তালাকের শর্ত হিসেবে গন্য হয়েছে, আরো কি কি শর্ত করেছি সঠিক মনে নেই, যদি ৩-৪ টা শর্ত দিয়ে থাকি আর সে ৩-৪ টা ভিন্ন-ভিন্ন শর্ত ১বার করে বা তার বেশি বার ওই শর্ত গুলা ভাঙ্গে তাহলে কি ৩ তালাক হবে,কখনো বলেছি তালক দিবো আর কখনো বলেছি এই কাজ করলে তালাক হবে, শুধু একটা ঘটনা মনে আছে আমি বলেছিলাম, বিয়ের পর আমি যদি এমন কিছু শুনি তহলে কিছু চিন্তা করবো না সোজা তালাক,(উদ্দেশ্য তালাক দিবো ভবিষ্যতে,আপনাআপনি তলাক হবে না),আবার ফেসবুকে তাকে উদ্দেশ্য করে ভিডিও শেয়ার করছিলাম ছেলের মা-কে তার স্ত্রী অপমান করায় ছেলে ঐ স্ত্রী কে তালাক দেয়া এই রকম ভিডিও। এখন আমি বিয়ে আগে এই শর্ত গুলো প্রত্যাহার করতে চাই, কারন আমার দেয়া এই ৩-৪ টা শর্ত গুলা তো বিয়ের পর ভাঙ্গেবেই,আমরা বিয়ে করলে কি তালাক হবে? আমাদের এখন করনীয় কি?আমি এই মেয়ে-কেই বিয়ে করতে চাই, এখন আমি প্রবাসে থাকি। কিভাবে সমাধান করতে পারি?
নিবেদক
মুহা.ফারদিন ইসলাম
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما
সমাধান: ইসলামী শরীয়তে বিবাহ বহির্ভূত তথাকথিত রিলেশনশিপ বা প্রেমের সম্পর্ক সম্পূর্ণ হারাম।একে অপরের সঙ্গে বিনা প্রয়োজনে কথাবার্তা, নির্জনে দেখা সাক্ষাৎ, ম্যাসেজ আদান-প্রদান ইত্যাদি সবই ইসলামে নিষিদ্ধ।সুতরাং এসব হারাম সম্পর্ক থেকে বেঁচে থাকা জরুরী।তাই আপনাদেরকে পূর্বের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে খাঁটি দিলে তওবা ও ইস্তেগফার করতে হবে।
প্রশ্নোক্ত বিবরণ সত্য হলে আপনি ঐ মেয়েকে বিবাহ করতে পারবেন।বিবাহের পর আপনার দেওয়া শর্তগুলো পাওয়া গেলেও তালাক কার্যকর হবে না।কেননা আপনি তাকে বিবাহ করার সাথে তালাককে শর্ত যুক্ত করেননি।আর ম্যাসেজের যে কথাগুলো এখন মনে নেই সেগুলোর কারণেও কোন তালাক কার্যকর হবে না।কেননা মনে না থাকা কথার উপর ভিত্তি করে তালাক কার্যকর হয় না। তাই পূর্বের ম্যাসেজগুলো পুনরায় খুঁটিয়ে দেখার কোন প্রয়োজন নেই।
الاحالة الشرعية على المطلوب-
أخرج الإمام البخاري رح في”صحيحه”(٢/٧٩٢) وقال إبن عباس رض جعل الله الطلاق بعد النكاح
وفي”الدرالمختار”(٤/٥٨٢) شرطه الملك….أوالإضافةاليه….فلغا قوله لأجنبية إن زرت زيدا فأنت طالق فنكحها فزارت
وفي”ردالمحتار” (٤/٤١٩) (كتاب الطلاق) ومحله المنكوحة أي: ولو معتدة عن طلاق رجعي أو بائن غير ثلاث في حرة وثنتين في أمة
وفي”الهداية”(٢/٣٨٥) وإذا أضاف الطلاق إلى النكاح وقع عقيب النكاح مثل أن يقول لأمرأة إن تزوجتك فانت طالق أو كل إمرأة اتزوجها فهي طالق… ولا تصح إضافةالطلاق إلا أن يكون الحالف مالكا أو يضيفه إلى ملك ….. بأن قال لأجنبية إن خلت الدار فانت طالق ثم تزوجها فدخلت الدار لم تطلق
وفي”فتاوي دارالعلوم ديوبند” (١٠-١١/٩٥) قبل النکاح بدون اضافت الی النکاح ایسی تعلیق صحیح نہیں ہے.انتهى، والله أعلم بالصواب