বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি’আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: মাননীয় মুফতী সাহেব হুজুর, আসসালামু আলাইকুম। আমি বর্তমানে কাতার আছি। দেশে থাকাকালিন আমরা কাজী অফিসে বিয়ে করি। কোন এক ঝামেলার কারণে ১ তালাক দেই। (এটা ছিলো আমার চরম ভুল আমার অনেক রাগ আমি আমার ভুল বুঝতে পেরে নিজেই শপথ নেই যে আর যাই হয়ে যাক না কেন আমি এই শব্দ মুখেও আনবো না.) পরবর্তীতে আমি কাতার আসি আগস্ট এর ২৩ তারিখ। এবং সেপ্টেম্বর এর ২৩ তারিখ আমার বাবা (ইলেক্ট্রিক শক এক্সিডেন্টে) তার ঠিক ২ দিন পর পারিবারিক কোন একটা বিষয় নিয়ে ওর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ও প্রচন্ড রেগে যায়।(ওর ছোট বেলায় টাইফয়েড হয়েছিলো তারপর থেকে ওর মানসিক সমস্যা ও প্রচন্ড রেগে অজ্ঞান হয়ে যাইতো তখন এখন হয় না কিন্তু রাগ জেদ কমে নাই) তো আমি জানি ওর সমস্যা। এক পর্যায় ও তালাক চাওয়া শুরু করে। প্রথম এক ঘন্টা অনেক বলছি এক পর্যায়ে আমি কান্না করে বলছি আমি পারবো না। তুমি যা মন চায় করো গা। যারে মন চায় ডাকো। পরে আমি নেট অফ করে রাখছিলাম। ১৫/২০ মিনিট পর নেট খুলছি আবার ও চাওয়া শুরু করছে। আমার একই কথা যে পারবো না যা করার করো গা। (আমি এই ঘটনার কয়েকদিন আগে ইউটিউবে একজন হুজুরের বক্তব্য দেখছিলাম। যে ছেড়ে দিলাম বললে নাকি তালাক হয় না। যদি না নিয়ত থাকে। এটা নাকি কেনায়া শব্দ। ওনার এই কথা তখন মাইন্ডে আসে হুজুর তো বলছিলো এটা বললে তো কিছু হবে না। আমার তো নিয়ত নাই ।) ওই ভিডিওর লিঙ্ক- https://youtu.be/8FfN6V0LEDo?si=d00DGh3adil-E-18 তো আমি ওকে থামানোর জন্য বলি যে ছেড়ে দিলাম যাও। আমার কোন নিয়ত ছিলো না ওকে ছাড়ার বা তালাক দেয়ার। ওর ঠিক পর মূহুর্তেই ও একটু থেমে বলে কি বললা তুমি.? আমি পরে বলছি আমার নিয়ত নাই ওইটা থামানোর জন্য বলছি। ও হয়ত এইটা শুনে ভয় পাইছে তাই ও আর কথা বাড়ায় নাই। আমি আবারও বলছিলাম যে, আমি পারবো না তুমি যাকে মন চায় আনো যার কাছে মন চায় যাও। আমি তালাক দিতে পারবো না.! কারণ আমি দিবো না হুজুর এখন আমার প্রশ্ন আমি তো ওকে থামানোর জন্য। এবং ওই হুজুর এর বক্তব্য অনুযায়ী বলছিলাম। আমার তো নিয়ত ছিলো না। তারপরও ফেসবুকে ফতোয়া গ্রুপের বিভিন্ন পোস্ট দেখে আমার মানসিক অবস্থা শোচনীয়। এই প্রবাসে মানসিক অবস্থা ঠিক না থাকলে সার্ভাইব করবো কিভাবে.! একটু সমাধান দেন। কোন কিছুতেই মন বসছে না ( আমি আরো ৩ জন হুজুরকে জিজ্ঞেস করেছি। ২ জন বলেছে কিচ্ছু হবে না যদি নিয়ত না থাকে আর সন্দেহ থাকে। আর একজন বলেছে যে এটা নাকি ছরিহ। এখন এই বিষয়টা নিয়ে প্রচুর ওয়াসওয়াসার ভিতর আছি) আল্লাহর কসম আমি কখন চাই নাই ওকে ওইসব বলতে।
নিবেদক
আরমান খান
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে আপনার স্ত্রীকে “ছেড়ে দিলাম যাও” বলার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী কার্যকর হয়েছে। কেননা আমাদের সমাজে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। এখন আপনি পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে অর্থাৎ স্ত্রী ঋতুমতী হলে তিনটি ঋতু আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব করার পূর্বেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করতে হবে। যেমন একথা বলতে পারেন যে, আমি আমার স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে পুনরায় গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃবহাল হয়ে যাবে। তবে যদি ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তাহলে নতুনভাবে মহর ধার্য করে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে পুনরায় বিবাহ করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, আপনি যেহেতু এর আগেও ঐ স্ত্রীকে এক তালাক দিয়েছিলেন তাই স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়া হোক বা ইদ্দত শেষে ফিরিয়ে নেওয়া হোক উভয় অবস্থায় আপনি কেবলমাত্র এক তালাকের অধিকারী হবেন। তাই পরে কখনো ঐ স্ত্রীকে এক তালাক দিলেই সে (স্ত্রী) আপনার জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে এভাবে পুনরায় বিবাহ করলেও ঘর-সংসার করা বৈধ হবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী-সন্তান এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়। তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতি প্রয়োজন ছাড়া তা প্রয়োগ করা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়। যদি কখনো তালাক দিতেই হয় তাহলে পরামর্শ অনুযায়ী এক তালাকের বেশি দেওয়া উচিত নয়। তাও শান্ত পরিবেশে রাগের পরিবেশে নয়।
الاحالة الشرعية على المطلوب
في”رد المحتار”(4/530) سرحتك وهو”رها كردم” لانه صار صريحا في العرف
وفي”رد المحتار”(4/530) فان سرحتك كناية لكنه في عرف الفرس غلب استعماله في الصريح فاذا قال “رها كردم” اي سرحتك يقع به الرجعي مع ان اصله كناية ايضا وما ذاك الا لانه غلب في عرف الناس استعماله في الطلاق وقد مر ان الصريح ما لم يستعمل الا في الطلاق من اي لغه كانت
وفي الهندية”(1/447) اذا قال الرجل لامراته: (بهشتم ترا از زنى) فاعلم بان هذه اللفظة استعملها اهل خراسان واهل العراق في الطلاق وانها صريحة عند ابي يوسف حتى كان الواقع بها رجعيا ويقع بدون النية وفي الخلاصة وبه اخذ الفقيه ابو الليث وفي “التفريد” وعليه الفتاوى، كذا في التاتارخانية
وفي”نظام الفتاوى”(2/98) سوال: لفظ چھوڑ دی کو دار العلوم دیوبند میں کنایہ میں شمار کیا ہے اور سرحتك فارقتك کی معنی میں لیا ہے اور فتاوی محمدیہ اور امداد الفتاوی میں اور اسلام کا مکمل نظام طلاق میں لفظ “چھوڑ دی” کو صریح لکھا ہے اور وہاں بھی چھوڑ دی کو سرحتک کے معنی لکھا ہے اس کی کیا وجہ ہے؟ اگر لفظ چھوڑ دی صریح ہے تو پھر چلی جا، واسطہ نہیں، الگ ہو جا، یہ الفاظ بھی صریح ہونے چاہیے؟ الجواب فتاوی دارالعلوم کا فتاوی جس زمانہ کا ہے اس زمانہ میں حضرت مفتی عزیز الرحمن کے نزدیک طلاق صریح کے معنی میں متعارف بہ تعارف نہیں ہوا تھا اس لیے وہ جواب ہے اور امداد الفتاوی وغیرہ جو بعد کے جوابات ہیں ان کے زمانہ میں طلاق صریح کے لیے متعارف با تعارف ہو چکے ہیں اس لیے یہ جو اب ہے
وفي”فتاوى محمودية”(18/279) دوسرا لفظ “میں نے تجھے چھوڑ دیا” ہمارے عرف میں بمنزلہ صریح طلاق کے ہے اس سے بغیر نیت کے بھی طلاق واقع ہو جاتی ہے. ،انتهى والله أعلم بالصواب