আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

উসমান (রা:) এর শাহাদতের ঘটনা প্রসঙ্গে

শেয়ার করুন !!

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামিয়াতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া, পোরশা, নওগাঁ।
বিষয়: উসমান (রা:) এর শাহাদতের ঘটনা।
প্রশ্ন: মাননীয় মুফতী সাহেব হুজুর, আপনার কাছে আমার জানার বিষয় হলো, হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে, কে বা কারা হত্যা করেছিল এবং কিভাবে হত্যা করেছিল এর সঠিক তথ্যটা বিস্তারিতভাবে জানালে উপকৃত হতাম।
নিবেদক
আব্দুল্লাহ আল মারুফ
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: উসমান রা: এর হত্যাকারীর পরিচয়: হযরত উসমান (রা:) এর হত্যাকারীর নামের ব্যাপারে একাধিক মন্তব্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, তাঁর হত্যাকারী হলেন, মিসরের কিনদা গোত্রের জনৈক ব্যক্তি যাকে গাধা বলে ডাকা হত। আর তার উপনাম ছিল আবু রুমান। আবার কেউ বলেন হত্যাকারী লোকটির নাম ছিল, সুদান ইবনে রুমান আল মুরাদী। তবে ইবনে উমর (রা:) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি খলিফা উসমান (রা:) কে হত্যা করেছে তার নাম ছিল আসওয়াদ ইবনে হুমরান। ( আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/১৭৮ কিতাবুছ ছেকাত ২/১৩৭)
হযরত উসমান (রা:) এর হত্যার ঘটনা: ঘটনাটি ঘটেছিল হজ্বের মৌসুমে। মদীনাবাসীর অনেকেই হজ্বের জন্য মক্কায় চলে গেলে বিদ্রোহীরা দ্রুত সক্রিয় হয়ে ওঠে। কেননা তারা অনুধাবন করতে পেরেছিল যে, আরো বিলম্ব করলে বিভিন্ন রাজ্য থেকে খলিফার সহায়তাকারী বাহিনী এসে যেতে পারে। এদিকে হজ্বের দিনও শেষ হয়ে আসছিল। ফলে তারা ওদিক থেকেও প্রতিরোধের মুখে পড়ার আশংকা অনুভব করছিল। এছাড়া তারা জানতে পারে হাজিগণ হজ্ব শেষে উসমান (রা:) কে সাহায্য করতে ছুটে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুতরাং যখন তাদের কাছে তাদের অস্তিত্বের জন্য ভয়ংকর এ সংবাদ এসে পৌঁছে তখন বিদ্রোহীরা কাল বিলম্ব না করে আমিরুল মুমিনের ঘরে আক্রমন চালিয়ে বসে। ফলে হাসান ইবনে আলী, আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর, মুহাম্মদ ইবনে তালহা, মারওয়ান ইবনুল হাকাম, সাইদ ইবনুল আস সহ সাহাবীদের সন্তান প্রতিরোধ গড়ে তুললে যুদ্ধ বেধে যায়। উসমান (রা:) রক্তপাত বন্ধের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে বলেন আল্লাহ, আল্লাহ, তোমরা আমাকে সাহায্য করা থেকে মুক্ত, কিন্তু যুবক সাহাবীরা তাঁর একথা মানেননি। হযরত উসমান (রা:) এর গোলাম তাঁর সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলে তিনি তাকেও বাধা দেন। এমনকি ঘোষণা দেন, যে অস্ত্র ফেলে দিবে সে মুক্ত। ( আল-বিদায়া ওয়াননিহায়া-১৭৪ পৃ:) উসমান (রা:) স্পষ্ট ভাষায় বার বার কঠোরভাবে নিষেধ করতে থাকেন। তিনি ছিলেন খলিফা, তার আনুগত্য জরুরী। তিনি বলতে থাকেন, আমি বার বার তোমাদের সতর্ক করছি , যারা আমার আনুগত্য জরুরী মনে করো তোমরা হাত থেকে অস্ত্র ফেলে দাও। তিনি একথা এজন্যে বলেছিলেন যে, রাসূলের পক্ষ থেকে শাহাদতের ব্যাপারে তিনি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন। তাই তার বাসনা ছিল তাঁর রক্ত প্রবাহিত হলেও যেন মুসলমানের রক্ত প্রবাহিত না হয় এবং মুসলমানরা যেন ফেতনায় না পড়ে।
বিদ্রোহীরা আমিরুল মুমিনের ঘর অবরোধ করে ঘরের দরজা ও কার্নিশে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং পাশের ঘর দিয়ে দেয়াল টপকিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে যারা ছিলেন তারা ভয়ানকভাবে রেগে উঠেন। উসমান (রা:) তখন নামায পড়ছিলেন নামায শেষে তিনি তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এদিকে কুরাইশের চার যুবক আঘাতপ্রাপ্ত হন। তারা হলেন হাসান ইবনে আলী, আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর, মুহাম্মদ ইবনে হাতিব, ও মারওয়ান ইবনুল হাকাম। এছাড়া শাহাদত বরণ করেন মুগিরা ইবনু আখনাস, নিয়ার ইবনু আব্দিল্লাহ আসলামি (আল-বিদায়া ওয়ান ‍নিহায়া ৭/১৯৬) ইবনে আওন সূত্রে ইবনে আসাকির বর্ণনা করেন যে, এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের মধ্যে কিনান ইবনে বিশর, খলিফার মুখমন্ডল এবং মাথার অগ্রভাগে লোহার হাতুরি দিয়ে আঘাত করলে খলিফা কাত হয়ে পড়ে যান। এরপর সুদান ইবনে হুমরান আল মুরাহী নামের এক ব্যক্তি আরো অতিরিক্ত আঘাত করে তাকে হত্যা করে। অবশ্য কোন বর্ণনায় এসেছে আমর ইবনুল হুমুক লাফ ‍দিয়ে খলিফার বুকে চড়ে বসে, তখন তাঁর অন্তিম অবস্থা সে বর্শা দ্বারা নয় বার আঘাত করে এবং বলে তিনটা আল্লাহর উদ্দেশ্যে, বাকি ছয়টা আমার বুকে পঞ্জিভূত ক্ষোভের জন্য। (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৭৮পৃ: খলিফাতুল মুসলিমিন উসমান ইবনু আফফান (রা:) ড: আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি-৫৫৮পৃ:)

الاحالة الشرعية على المطلوب
في كتاب الثقات (1/264) فقال عثمان لمحمد بن أبي بكر والله لو رآك أبوك لساءه مني فرجع محمد وتقدم إليه سودان ابن رومان المرادى ومعه مشقص فوجأه حتى قتله وهو صائم
وفي “البداية والنهاية” (4/178) وجاءه رجل من كندة من أهل مصر يلقب حمارا ويكنى بأبى رومان وقال قتادة اسمه رومان وقال غيره كان أرزق أشقر وقيل كان اسمه سودان إبن رومان المرادى وعن ابن عمر قال كان اسمه الذى قتل عثان أسود بن حمران
وفي”البداية والنهاية”(4/174) كان الحصارمستمرا من اواخر ذى القعدة إلى يوم الجمعة الثامن عشرمن ذى الحجة فلما كان قبل ذلك بيوم قال عثمان للذين في الدار من المهاجرين والانصار وكانوا قريبا من سبعمائة فيهيم عبدالله بن عمر وعبد الله بن الزبير والحسن والحسين ومروان وأبو هريرة و خلق من مواليه ولوتركهم لمنعوه فقال لهم أقسم على من لى عليه حق أن يكون يده وأن ينطلق إلى منزله وعنده من أعيانه الصحابة وأعيانهم جم غفير وقال لرقيقه من اغمد سيفه فهو حر
وفي “البداية والنهاية”(4/176) وكف يده عن القتال وأمر الناس وعزم عليهم ان لا يقاتلوادونه
وفي “البداية والنهاية”(4/178) روى ابن عساكر عن ابن عون أن كنانة بن بشر ضرب جبينه ومقدم رأسه بعمود حديد فخرج لجنبه وضربه وسودان حمران المرادى بعد ما خرج لجنبه فقتله وأما عمروبن الحمق فوثب على عثمان فجلس على صدره وبه رمق فطعنه تسع طعنات وقال أما ثلاث من هن فلله وست كما كان في صدره عليه انتهى ، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।


শেয়ার করুন !!
Scroll to Top