আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

তালাকের মাসআলা প্রসঙ্গে

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি’আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: তালাকের মাসআলা প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: হুজুর আসসালামু আলাইকুম। আমার হাজব্যান্ড আমার সাথে সব সময় খারাপ ব্যবহার করতো। সেটা নিয়ে উনি ইফতা বোড থেকে ফতোয়া নিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ্। কিন্তু আসার সময় উনি জেনে আসছে যে, বউকে যদি ‘‘তুমি আমার জন্য হারাম’’ বলে তাহলে নাকি তালাক হয়ে যায়। পরে উনি আমাকে ফোন করে বলে, আমি কী তোমাকে ‘‘তুমি আমার জন্য হারাম’’ আমি একথা কোনদিন বলছি। আমি বললাম, মনে নাই। উনি আমাকে বলে ২০ মিনিট সময় দিছি তুমি ভাবো। পরে আবার কল দেয়, আমি বলি মনে নাই। তার আধা ঘণ্টা পরে আবার কল দেয়। উনি আবারও জিজ্ঞেস করে আমি বলি আমার মনে নাই। পরে আমার হাজব্যান্ড নিজে নিজে বলে শালার কত কিছু বলতাম, অটো তালাক, চলে যা, ছেড়ে দিলাম, ছেড়ে দিছি, তুমি আমার জন্য হারাম, তুমি আমার জন্য হারাম যদিও আগে এসব কথা বলে নাই বাট ওদিনই বলেছে। উনি বলেছেন, আগে বলেছে কি না তার উত্তর পেতে নিজে নিজেই বলেছেন আমাকে কল দিয়ে। এসব বলে সাথে সাথে আবার চুপ হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি এগুলো কেন বলেছি। আমি বলি তুমি জানো। উনি এসব জিজ্ঞেস করেছে আগে এসব বলেছে কি না তার উত্তর মাথায় আনার জন্য আলোচনার প্রেক্ষাপট তাই বলে। কিন্তু কথা শেষ করতে না করতে উনি কনফিউজড এসব কেন বা কী নিয়তে বলেছে। এতে কী তালাক হবে। আমার হাজব্যান্ড তালাকের মাসালা নিয়ে প্রায় ০২ মাস ধরে সন্দেহ এর মধ্যে আছে। হুজুর আমরা সেপারেশন নিয়ে অনেক আলোচনা করতাম আগে কিন্তু কি বলতাম আমাদের উভয়ের মনে নাই। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? আমার স্বামী সারাদিন তালাকের ভিডিও দেখে।
নিবেদক
তানজিলা আক্তার
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি বাস্তবেই সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে আপনার স্বামীর উক্ত বক্তব্যর দ্বারা আপনার উপর কোন তালাক কার্যকর হবে না। কেননা তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য শর্ত  হল, স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তালাকের শব্দ প্রয়োগ করা। যেহেতু আপনার স্বামী উক্ত বক্তব্য মাথায় আনার জন্য আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলেছেন, সুতরাং আপনার উপর কোন তালাক কার্যকর হবে না। আর আগে সেপারেশন নিয়ে যা আলোচনা করেছেন তা যেহেতু ভুলে গিয়েছেন এবং সে আলোচনায় তালাক কার্যকর হয় এমন কোন কথা থাকার বিষয়টি যেহেতু ‍নিশ্চিত নয় তাই এর কারণেও কোন তালাক হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, ‍রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‍নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের থেকে ভুলে যাওয়া এবং মনে না থাকাকে উঠিয়ে নিয়েছেন। অথাৎ ক্ষমা করে ‍দিয়েছেন।(ইবনে মাজাহ-২০৪৫)।
উল্লেখ্য, জেনে রাখা উচিত যে, ওয়াসওয়াসা হলো শয়তানের পক্ষ থেকে কুমন্ত্রণা। এর দ্বারা শয়তানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঈমানদারকে সর্বক্ষণ চিন্তা পেরেশানিতে আবদ্ধ রাখা। তাই এর প্রতিকার হচ্ছে সেদিকে একেবারেই ভ্রুক্ষেপ না করা, বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা, তাওবা ইস্তেগফার করা, গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং নিম্নে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশি-বেশি পড়া।
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ  (١)
উচ্চারণ: “আউযুবিল্লাহি মিনাশ্ শায়তানির রাজীম”।
(٢) رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ ( سورة المؤمن ٩7 -٩٨ )
উচ্চারণ: “রাব্বি আউযুবিকা মিন হামাযাতিশ্ শায়াতীন ওয়া আউযুবিকা রাব্বি আই ইয়াহ্‌দুরুন”।
(3) آمنت بِاللَّهِ وَ رَسوله
উচ্চারণ: “আমানতু বিল্লাহি ওয়া রাসূলিহি”।

الاحالة الشرعية على المطلوب
قوله تعالى : وإما ينزغنك من الشيطان نزغ فاستعذ بالله إنه سميع عليم.(سورة الأعراف-200)
أخرج الإمام البخارى في” صحيحه “(برقم 2528) عن أبى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إن الله تجاوز عن أمتى ما وسوست به صدورها مالم تعمل أوتتكلم
وأخرج الإمام ابن ماجه في”سننه”(1/147‘ برقم-2045) عن ابن عباس رض عن النبي ﷺ قال إن الله وضع عن أمتي الخطا والنسيان وما استكرهوا عليه
أخرج الإمام مسلم في” صحيحه “(برقم 134) عن أبى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يزال الناس يتساءلون حتى يقال هذا خلق الله الخلق فمن خلق فمن وجد من ذلك شيئا فليقل أمنت بالله
وفي” رد المحتار”(4/458) ولا يلزمه كون الإضافة صريحة في كلامه(إلى قوله) لأن العادة أن من له امرأة إنما يحلف بطلاقها لا بطلاق غيرها
وفي” البحر الرائق”(3/253) ولا يلزمه كون الإضافة صريحة في كلامه لو قال طالق فقيل له من عينت فقال امرأتي طلقت امرأته لو قال امرأة طالق أو قال طلقت امرأة ثلاثا وقال لم أعن امرأتي يصدق ويفهم منه أنه لم  يقل ذلك تطلق امرأته لأن العادة أن من له امرأة إنما يحلف بطلاقها لا بطلاق غيرها‘ وفي أيضا (3/451) لو كرر مسائل الطلاق بحضرة زوجته ويقول أنت طالق ولا ينوى لا تطلق
وفي”الهندية”(1/488) إذا أضافه الطلاق إلى الشرط وقع عقيب الشرط
وفي” البزازية”(10/112) لا يقع الطلاق لعدم الإضافة إليها
و راجع أيضا في”التاتارخانية”(4/421) و”الهندية”(1/425) و” فتاوى دار العلوم زكريا”(4/47) و”كتاب النوازل”(9/126)
وفي” فتاوى قاسميه”(14/245) الجواب: طلاق واقع ہونے کیلئے بیوی کا آمنے سامنے ہونا لازم نہیں ہے اور نہ ہی بیوی کا سننا لازم ہے بلکہ صرف بیوی کی طرف منسوب کرنا کافی ہوتا ہے اور بیوی کی طرف نسبت بھی صراحۃ ضروری نہیں ہے بلکہ قرائن کافی  ہیں اور  سوال نامہ میں جھگڑا قرینہ کیلئے کافی ہے اس لے مذکور ہ صورت میں طلاق واقع ہو چکی ہے. انتهى ، والله أعلم بالصواب.

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

শেয়ার করুন !!
Scroll to Top