আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

রাগের অবস্থায় তালাক প্রসঙ্গে

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল জামি’আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: রাগের অবস্থায় তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম আমি মুহা. রাসেল হোসেন। আমি বিয়ে করছি দেড় বছর হয়েছে। আমাদের কাবিন হয়েছে, স্ত্রীকে এখনো তুলে আনা হয় নাই। এছাড়া আমার স্ত্রীর জিনের প্রবলেম। অনেক হুজুর দেখাইছি, রুকাইয়া করছি, অনেক হুজুর বলেছে যে, আমাদের নাকি বিচ্ছেদের যাদু করেছে, এখনো চিকিৎসা চলছে। তো এর মধ্যেও আমাদের গত তিন দিন ঝগড়া হয় আমার বোনকে নিয়ে। আমার বোনকে সে সহ্য করতে পারে না। বোন যদি আমার কাছে আসে অথবা আমার সাথে কথা বলে, এগুলো সে সহ্য করতে পারে না। এই বিষয় নিয়ে আমাদের তিনদিন যাবত ঝগড়া, গত ১৮-১১-২০২৪ সন্ধ্যাবেলায় আমার সাথে ঝগড়া হয়, অনেক খারাপ ভাষায় বোনকে নিয়ে কথা বলতেছিল, আমি অনেক রাগান্বিত হয়ে যাই, যখন রাগান্বিত হই, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি, আমি স্ত্রিকে তিন তালাক বলে ফেলি, পরক্ষণে আমার স্ত্রী কান্না করে দেয় এবং ফোন কেটে দেয়। আমিও বুঝতে পারি না আমি কি বলে ফেলেছি, রাতে আমি দুই একজন আলেমের শরণাপন্ন হই। তারা বলে কোন বিজ্ঞ মুফতি সাহেবের থেকে ফতোয়া নিতে। এমতাবস্থায় আমার স্ত্রীকে আমি ফিরে পেতে চাই? হুজুর আমি আমাদের সংসারটা ভাঙ্গতে চাই না, এমতাবস্থায় আমাদের দুজনের কথা চিন্তা করে আপনি একটা সমাধান দিলে খুবই উপকৃত হতাম।
নিবেদক
মুহা.রাসেল হোসেন
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি আপনার এই পরিমাণ হুঁশ থাকে যে, স্ত্রীকে তিন তালাক বলার বিষয়টি আপনার মনে আছে, তালাকের পর কারো পক্ষ থেকে আপনাকে স্মরণ করে দিতে হয়নি তাহলে আপনার স্ত্রীর উপর তিন তালাকই কার্যকর  হয়েছে এবং আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আপনি আর আপনার স্ত্রীকে স্বাভাবিকভাবে ফিরিয়ে নিতে পারবেন না। তবে যদি স্ত্রী আপনার তালাকের ইদ্দত শেষ করার পর, অর্থাৎ স্ত্রী ঋতুমতী হলে তিনটি ঋতু, আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসাব হওয়ার পর স্বেচ্ছায় অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর কোন কারণে তালাক দেয়, বা মারা যায়, তাহলে দ্বিতীয় স্বামীর ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর, স্ত্রী রাজি থাকলে আপনি তার সাথে নতুনভাবে, দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে, মোহর ধার্য করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। আর যদি রাগের কারণে স্বাভাবিক হুঁশ হারিয়ে ফেলেন এবং তালাকের শব্দ বলার সময় কি বলেছেন, নিজেও জানেন না, তাহলে আপনার স্ত্রীর উপর কোনো তালাকই কার্যকর হয়নি। বরং আপনার স্ত্রী পূর্বের ন্যায় স্ত্রী হিসেবেই বহাল আছে।
উল্লেখ্য, শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক খুবই অপছন্দনীয় ও গর্হিত কাজ, তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতি প্রয়োজন ছাড়া তা প্রয়োগ করা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়। যদি কখনো তালাক দিতেই হয়, তাহলে পরামর্শ অনুযায়ী এক তালাকের বেশি দেওয়া উচিত নয়। তাও শান্ত পরিবেশে, রাগের পরিবেশে নয়।

الاحالة الشرعيةعلى المطلوب
قوله تعالى: فإن طلقها فلا تحل له من بعد حتى تنكح زوجا غيره( سوره البقره- ٢٣٠)
وفي “الهندية” (٢/ ٣٩٩) وإن كان الطلاق ثلاثا في الحرة أو ثنتين في الامة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا ويدخل بها ثم يطلقها أو يموت عنها
وفي “رد المحتار” (٤/٤٣٩) قلت: وللحافظ ابن القيم الحنبلي رسالة في طلاق الغضبان، قال فيها: إنه على ثلاثة أقسام: أحدها أن يحصل له مبادي الغضب بحيث لايتغير عقله ويعلم ما يقول ويقصده، وهذا لا إشكال فيه، الثاني أن يبلغ النهاية فلايعلم ما يقول ولايريده، فهذا لا ريب أنه لاينفذ شيء من أقواله، الثالث من توسط بين المرتبتين بحيث لم يصر كالمجنون، فهذا محل النظر، والأدلة تدل على عدم نفوذ أقواله اهـ  ملخصاً من شرح الغاية الحنبلية، لكن أشار في الغاية إلى مخالفته في الثالث حيث قال: ويقع طلاق من غضب خلافاً لابن القيم اهـ وهذا الموافق عندنا لما مر في المدهوش”
وفي “بدائع الصنائع”(٤/٢٦٩) ومنها أن لا يكون معتوها ولا مدهوشا ولا مبرسما ولا مغما عليه ولا نائما فلا يقع طلاق
وفي “فتح الباري” (٩/٣٨٩) وقال الفارسي في مجمع الغرائب ان طلاق الناس غالبا انما هو في حالة الغضب وقال ابن المرابط ولو جاز عدم وقوع طلاق الغضبان لكان لكل احد ان يقول فيما جناه كنت غضبانا واراد بذلك الرد على من قال ان الطلاق في الغضب لا يقع
وفی “کتاب النوازل” (٩/ ٢٠٢) جو شخص غصہ میں دماغی توازن کھو بیٹھا ہو اس کی طلاق کا حکم؟الجواب: اگر واقعة  اپنا دماغی توازن کھو بیٹھا تھا اپ اسے بالکل یاد نہیں ہے کہ اس نے طلاق کا کوئی لفظ کہاہے تو ایسی صورت میں اس کی بیوی پر طلاق کا حکم نہیں ہوگا.- انتهى والله اعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

শেয়ার করুন !!
Scroll to Top