বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি’আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়:তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আমার স্বামীর সাথে আমার আট বছরের বিবাহিত জীবন, দেড় বছরের মাথায় একদিন ফোনে রাগ করে তিন তালাক বলেছিলো, এক তালাক দুই তিন এভাবে। তার দুই বছর পরে একদিন আমার শাশুড়ির সামনেও ঝগড়া করতে করতে এক দুই তিন এভাবে তালাক দিলাম বলেছিলো রাগের মাথায় মুখে মুখে। তার একবছর পরে কোর্ট থেকে ডিভোর্সের নোটিশ করেছিলো এবং আমাদের কাছে আসার আগেই সেটা বাতিল করে দেয় এবং শেষ ছয় মাস আগে কাজী দিয়ে দু’পক্ষই মিলে তালাকনামাই সই করি। কিন্তু মুখে কিছু উচ্চারণ করেনি শুধু বলেছিলো, তিন তালাক লেখেন, সেখানে কত তালাক সেটা লেখার আগেই ঝামেলা সৃষ্টির কারণে সাইন করিয়ে নেয়। কিন্তু আমাদের একটা মেয়ে আছে পাঁচ বছর বয়স, ওর কথা ভেবে কোনো নিয়ম না মেনে তিন মাস পরে কাজি দিয়ে বিয়ে করে একসাথে থাকছি। কিন্তু এখন আমার সবসময় মনে হয়, পাপ করছি তার জন্য এখন আলাদা হতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্বামী খুব কান্নাকাটি করছে, এই অবস্থাতে আমি যদি তাকে ছেড়ে চলে যায় তার মনে কষ্ট দিয়ে এবং সে যদি আমাকে ক্ষমা না করে, এর জবাবদিহি কি আমার অনেক কঠিন ভাবে দিতে হবে আল্লাহর কাছে?
নিবদক
রিনা
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا و مصليا و مسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ যদি সত্য হয়, তাহলে বিবাহের দেড় বছর পরেই আপনার স্বামী যখন তিন তালাক বলেছিলো তখনই ইসলামী শরীয়ত ও চার মাযহাবের ঐক্যমতে আপনার উপর তিন তালাক কার্যকর হয়েছে। এর দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে এবং একে অপরের জন্য আপনারা হারাম হয়ে গেছেন। এরপর দীর্ঘ যে কয়েক বছর ঘর-সংসার করেছেন তা সবই অবৈধ হয়েছ। মাঝখানে কাজী দিয়ে শুধু বিবাহ পুনরায় পড়ানোর দ্বারা আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বৈধ হয়নি। আপনাদের এখনই পৃথক হয়ে যেতে হবে। আপনারা যদি বৈধভাবে ঘর-সংসার করতে চান, তাহলে আপনাকে স্বামীর কাছ থেকে পৃথক হয়ে ইদ্দত পালন করতে হবে। এরপর আপনাকে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এরপর দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করার পর স্বেচ্ছায় তালাক দেয় বা মারা যায়, তাহলে তার ইদ্দত পালন করে আপনারা উভয়ে রাজী থাকলে নতুনভাবে মহর নির্ধারণ করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। বর্তমানে আপনারা সম্পূর্ণ শরীয়ত পরিপন্থী, অবৈধভাবে ঘর-সংসার করছেন। আপনারা উভয়ে মারাত্মক কবীরা গুনাহে লিপ্ত আছেন। এ অবস্থায় স্বামী থেকে আপনি পৃথক হয়ে যাওয়ার কারণে যদি স্বামী মনে কষ্টও পায়, তাহলে এর কারণে আপনাকে আখেরাতে কোন জবাবদিহিতাই করতে হবে না। বরং স্বামীর সঙ্গে এভাবে সংসার করলেই আখিরাতে কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখিন হতে হবে। এখানে স্বামীর থেকে পৃথক হওয়ার বিষয়টি স্বামীর ক্ষমা করা না করার বিষয়েই না।
الاحالة الشرعية على المطلوب
أخرج الإمام البخاري في “صحيحه ” (2/791) برقم (5062) عن عائشة رض أن رجلا طلق امرأته ثلثا فتزوجت فطلق فسئل النبي صلى الله عليه و سلم أتحل للأول قال لا حتى يذوق عسيلتها كما ذاق الأول
أخرج الإمام النسائي في”سننه ” (2/83) برقم(3409) عن عائشة قالت جاءت امرأة رفاعة القرظي إلى النبي صلى الله عليه وسلم و أبو بكر عنده فقالت يا رسول الله إني كنت تحت رفاعة القرظي فطلقني البتة فتزوجت عبد الرحمن بن الزبير و أنه والله يا رسول الله ما معه إلا مثل هذه الهدبة وأخذت هدبة من جلبابها وخالد بن سعيد بالتاب فلم يأذن له فقال يا أبا بكر ألا تسمع هذه تجهر بما تجهر به عند رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال تريدين أن ترجعي إلى رفاعة لا حتى تذوقي عسيلة و يذوق عسيلتك
وفي”الهندية ” (1/535) وإن كان الطلاق ثلاثا فى الحرة وثنتين فى الأمة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا‘ ويدخل بها ثم يطلقها‘ أو يموت عنها
وفي” ملتقى الأبحر ” (2/88) ولاتحل الحرة بعد الثلاث ولا الأمة بعد الثنتين إلا بعد وطئ زوج أخر بنكاح صحيح ومضى عدته
وفي”التاتارخانية ” (5/147) وإن كان الطلاق ثلاثا فى الحرة أو ثنتين فى الأمة لاتحل له حتى تنكح زوجها غيره نكاحا صحيحا‘ ويدخل بها ثم يطلقها أو يموت عنها
وفی”کتاب النوازل” (9/346) تین طلاق کے بعد حلالہ شرعیہ کے بغیر جو نکاح ہوا ہے وہ شرعا معتبر نہیں ہے، اور یہ دونوں مرد وعورت حرام کے مرتکب ہیں، ان پر مفارقت اور اپنے جرم عظیم پر توبہ اور استغفار لازم ہے
راجع أيضا في”الهداية”(2/399) و”فتاوى دار العلوم ديوبند”(9/303)..انتهى، والله أعلم بالصواب