আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা

তালাক প্রসঙ্গে।

বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ, আল-জামি‘আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়া,পোরশা,নওগাঁ।
বিষয়: তালাক প্রসঙ্গে।
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম।শায়েখ আমি রেজাউল করিম। টঙ্গী গাজীপুর থেকে বলছি।
শায়েখ আমার একটি সাংসারিক মাসআলা জানার খুবই প্রয়োজন। নিম্নে বর্ণনা করা হল-
হুজুর আমার সংসারে প্রায় সময়ই ঋগড়া হয়ে থাকে। আমি অনেক কথাই বলে থাকি কিন্তু তালাক শব্দ বলি না। যেমন বলি-যা তুই যা। যাছ না কে? তুই গেলেই বাঁচি। আমরা আলাদা হয়ে যাবো।
আমার বউ প্রতি উত্তরে বলে- দে ছাইড়া দে যাইগা। টেকা দিয়া দে মানে মোহরানা দিয়া দে। দেস না কে?
ঋগড়া করার সময় এই গুলাই বলে থাকি। গত কয়েক দিন আগের একটি ঘটনা নিয়ে আমি খুবই চিন্তায় আছি। খোলা তালাক নিয়ে। একদিন ঋগড়া করার সময় হঠাৎ আমার স্ত্রী বলতে থাকে যে, আমারে ছাইড়া দে আমি যাইগা। আমি উত্তরে বলি যা দিছি ছাইড়া, যা। বউ বলে-এমনে যাইতাম না। টাকা দিয়া দে যাই গা।
এখন কি খোলা কি হয়ে গেছে??? এখন করনীয় কী?
বিঃদ্রঃ মৌখিক বিবরণে জানা গেছে উক্ত বাক্যগুলো বলার সময় তালাকের
নিয়ত ছিল না।
নিবেদক
মুহা.রেজাউল করিম।
بسم الله الرحمن الرحيم،حامدا ومصليا ومسلما-
সমাধান: প্রশ্নোক্ত বিবরণ অনুযায়ী আপনার বক্তব্যের প্রথম অংশ দ্বারা কোন তালাক কার্যকর হয়নি। কেননা এধরনের কথা তালাকের জন্য ইঙ্গিতসূচক। এক্ষেত্রে তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তালাকের নিয়ত শর্ত। আর তা এখানে পাওয়া যায়নি। তবে পরবর্তীতে স্ত্রীর কথার উত্তরে আপনার বক্তব্য “যা দিছি ছাইড়া যা” বলার দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও এক তালাকে রজয়ী কার্যকর হয়েছে। এখন যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চান তাহলে আপনার স্ত্রীর ইদ্দতের মধ্যে অর্থাৎ স্ত্রী ঋতুমতি হলে তিনটি ঋতু আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব করার পূর্বেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করতে হবে। অথবা স্ত্রীর সাথে স্বামী-স্ত্রী সূলভ আচরণ করলেও পূর্বের স্ত্রী হিসেবে বহাল হয়ে যাবে। তবে স্ত্রীকে এভাবে ফিরিয়ে নেওয়ার আগেই ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে নতুনভাবে মোহর ধার্য করে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিবাহ করতে হবে।
উল্লেখ্য, স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়া হোক বা ইদ্দত শেষে ফিরিয়ে নেওয়া হোক উভয় অবস্থায় আপনি কেবল মাত্র দুই তালাকের অধিকারী হবেন। তাই পরে কথনো ঐ স্ত্রীকে দুই তালাক দিলেই সে আপনার জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে এভাবে পুনরায় বিবাহ করলেও আর ঘরসংসার করা বৈধ হবে না।

الإحالة الشرعية على المطلوب-
في”الهندية” (١/٤٤٧) وإذا قال: (بهشتم ترا) ولم يقل (از زنی) فإن كان في حالة غضب ومذاكرة الطلاق، فواحدة يملك الرجعة ، وإن نوى بائنا أو ثلاثا، فهو كما نوى
وفي “الشامي” (٤/٥٣٠) “فإن سرحتك” كناية ؛ لكنه في عرف الناس غلب استعماله في الصريح، فإذا قال: “رھا کردم ” أى سرحتك يقع به الرجعى مع أن أصله كناية أيضا
وفي “التاتارخانية” (٤/٤٦٤) وإذا قال : ( بهشتم ترا) ولم يقل : (از زنی) فإن كان في حالة غضب ومذاكرة الطلاق، فواحدة يملك الرجعة وإن نوى بائنا أو ثلاثا، فهو كما نوى
في “الدر المختار” (4/516) فالكنايات لا تطلق بها قضاء إلا بنية أو دلالة الحال وهي حالة مذاكرة الطلاق أو الغضب‘ فالحالات ثلاث: رضا و غضب و مذاكرة‘ والكنايات ثلاث: ما يحتمل الرد‘ أو ما يصلح للصب أو لا و لا. فنحو أخرجي‘ واذهبي و قومي —-  يحتمل ردا.——- وفي مذاكرة الطلاق يتوقف الأول فقط.  وقال الشامي تحت قوله “يتوقف الأول فقط” أي ما يصلح للرد والجواب‘ لان حالة المذاكرة تصلح للرد والتبعيد كما تصلح للطلاق دون الشتم وألفاظ الأول كذالك فإذا نوى بها الرد لا الطلاق فقد نوى محتمل كلامه بلا مخالفة للظاهر فتوقف الوقوع على النية
وفي”احسن الفتاوى” (٥/١٤٩) سوال : ایک شخص نے اپنی عورت کو کہا کہ اپنے میکہ چلی جائی” تو طلاق ہوئی یا نہیں؟ جواب : اگر طلاق کی نیت سے کہا تو طلاق بائن ہوگی ورنہ نہیں
وفي “كتاب النوازل (٩/٣٠٦) اگر بیوی سے یہ کہا کہ “میں نے تجھ کو چھوڑ دیا چل اپنے ماں باپ کے پاس فون کر” تو اس سے ایک طلاق واقع ہو گئی ، عدت کے اندر اندر رجعت کی گنجائش ہے اور عدت گزرنے کے بعد دوبارہ نکاح کرنا ہوگا
وفي “قاسمیہ” (١٤/٦٢٧)  سوال:  زید کی زوجہ ہندہ اپنے میکے گئی تھی ، ہندہ نے فون پر شوہر سے خبریت معلوم کی اسی میں دونوں کے مابین نوک جھونک ہوگئی ہندہ نے کہا کہ تم مجھے چھوڑ دو، شوہر کہا میں نے تجھے چھوڑ دیا، تو کیا حکم ہے؟ اور کونسی طلاق واقع ہوگی؟
جواب :  زید جو بیوی سے یہ کہا کہ میں نے تجھے چھور دیا ہے، اس سے اس کی بیوی پر ایک طلاق رجعی واقع ہو گئی؛ اس لئے کہ یہاں کے عرف میں چھوڑ دیا کا لفظ طلاق کے لئے مستعمل ہے..انتهى، والله أعلم بالصواب

ফতোয়া প্রদান করেছেনঃ
মুফতি আব্দুল আলিম সাহেব (দা.বা.)
নায়েবে মুফতী-ফতোয়া বিভাগ
আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা, নওগাঁ ।

Scroll to Top